পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়।
১৫

উত্তর, ভাগীরথী নদীর পূর্ব্ব গোবিন্দপুর একটা শৃঙ্খলা অদ্ভুতদৃশ্য গ্রাম ছিল-স্থানে স্থানে কতকগুলি করিয়া কুটীরের সমাবেশ, আর সেই কুটীরসমষ্টির মধ্যে মধ্যে বনজঙ্গল। বর্তমান ফোর্ট উইলিয়াম নামক দুর্গ ও তৎসহিত ময়দান গোবিন্দপুরের স্থান অধিকার করিয়াছে।

 বাঙ্গালায় কোম্পানীর প্রথম বাণিজ্যিক উপনিবেশ হুগলী। ১৬৪৬ (১৬৪৮?) খৃষ্টাব্দে অথবা তাহার কিঞ্চিৎ পূর্ব্বে বা পরে ইংরেজরা তথায় একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। কোনও সাময়িক পরে জনৈক লেখক এ রূপ লিখিয়াছেন:—‘রাণী এলিজাবেথের রাজত্বের প্রথম ভাগে অক্সফোর্ড নগরের নিউ কলেজের ষ্টিফেন্স নামক জনৈক ইংরেজ ছাত্র একাকী পর্যটন করিয়া প্রবল প্রতাপ সুপ্রসিদ্ধ মোগল সম্রাটের রাজধানীতে উপস্থিত হইয়াছিলেন। প্রাচ্য রাজসভার যে সকল ঐশ্বর্য্য আড়ম্বরের কথা ঐতিহাসিকেরা লিখিয়া গিয়াছেন এবং কবিরা গাহিয়া গিয়াছেন, সেই সকল স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করাই তাঁহার উদ্দেশ্য ছিল। ঐ অক্সফোর্ডবাসী যুবক যে সকল বিবরণ স্বদেশে লিখিয়া পাঠাইয়াছিলেন, তৎপঠে পর্য্যটকগণ সুদূর প্রাচ্য ভূখণ্ডে পরিভ্রমণ করিবার নিমিত্ত নবানুরাগে উদ্দীপিত হইয়া উঠেন। ১৫৮৩ খ্রীষ্টাব্দে নিউবেরি ও ফিচ নামক দুইজন সাহেব মহারাণী এলিজাবেথের নিকট হইতে সম্রাট আকবরের নামে একখানি পত্র লইয়া স্থলপথে সায়িরা দিয়া ভারতবর্ষে উপনীত হন। ফিচ সাহেব যে সকল বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন, তাহা অদ্যাপি বর্তমান আছে। সেই বিবরণ হইতে ষোড়শ শতাব্দীতে এই দেশের ও ইহার অধিবাসীবর্গের অবস্থা কিরূপ ছিল, তাহার অনেক প্রয়োজনীয় কথাই আমরা জানিতে পারি।