পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম অধ্যায়।
২০৩

শুনানি ও বিচার হইত। এই বিচারালয়ে কয়েকজন বিচারক থাকিতেন, কিন্তু শেষ হুকুম দিবার ক্ষমতা নবাব স্বহস্তে রাখিতেন। বিচারকদিগের মধ্যে যিনি সর্ব্বপ্রধান বা অধ্যক্ষ থাকিতেন, তিনি নবাবের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া মোকদ্দমার সমস্ত অবস্থা বুঝাইয়া দিতেন, এবং মোকদ্দমার রায় সম্বন্ধে সকল বিচারকের মত এক হইলে নবাব তাহাতে স্বাক্ষর করিতেন। আসামীর নিজ ধর্ম্ম ও আইন-অনুসারে তাহার প্রতি দণ্ডবিধান করা হইত।

 কলিকাতা হাইকোর্টের ভূতপুর্ব্ব জজ সি, ডি, ফীল্ড সাহেব লিখিয়াছেন, মুসলমান-রাজত্বকালে দুই বিভিন্ন শ্রেণীর বিচারালয় কর্ত্তৃক বিচার বিতরিত হইত, যথা (১) কাজিদিগের অধিষ্ঠিত বিচারালয়। ইহারা মুসলমান আইনের সুবিস্তৃত ব্যবস্থা অনুসারে কার্য্য করিতেন, এবং (২) রাজপুরুষগণের অধিষ্ঠিত বিচারালয়, ইঁহারা কোন নির্দিষ্ট নিয়মের অধীন হইয়া কার্য্য করিতেন না, পরন্তু আপনাদের স্বার্থসাধনের দিকে দৃষ্টি রাখিয়াই কার্য্য করিতেন, বিশেষতঃ বিবদমান পক্ষদ্বয় ভিন্নজাতীয় ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হইলে ইঁহারা বড়ই সুবিধা পাইয়া বসিতেন; কিন্তু রাজা সময়ে সময়ে আবেদনাদির তদন্ত করিতেন; কিন্তু যুদ্ধব্যাপারে ও রাজকীয় অন্যান্য কার্য্যে অথবা অন্তঃপুরের আমোদপ্রমোদে তাঁহাকে অধিক সময় ব্যাপৃত থাকিতে হইত বলিয়া তিনি বিচারবিতরণ-কার্য্যে নিয়মিতরূপে বা কোনরূপ প্রণালীসঙ্গতভাবে যোগদান করিবার অবসর পাইতেন না। সুবাসমূহে অর্থাৎ বিভিন্ন প্রদেশগুলিতেও ঐ দুই শ্রেণীর বিচারালয় ছিল। কাজি সবিশেষ খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠাসম্পন্ন ব্যক্তি হইলে তদনুপাতে বিচারবিতরণকার্য্যেও তাঁহার প্রভাব অধিক হইত; কিন্তু সাধারণতঃ সুবাদারগণ