পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৬
কলিকাতার ইতিহাস।

করিয়াছিল; তাহারা আপনাদের প্রভুত্ব অক্ষুন্নভাবে বজায় রাখিবার অভিপ্রায়ে ধনবান ও বিত্তশালীদিগের বিভব লুণ্ঠন করিত। এরূপ অবস্থায় আইন আকবরী এবং প্রবলপ্রতাপসম্রাট্ আলমগীর অর্থাৎ ঔরঙ্গজেবের ফেতাওয়াই আলেমগিরি গ্রন্থের বিধিব্যবস্থাসমূহ যে উপেক্ষিত হইবে, তাহাতে আর আশ্চর্য্য কি? সেগুলি তৎকালে নিতান্ত অকার্য্যকর হইয়া পড়িয়াছিল। পূর্ব্বোক্ত প্রকার দুঃসাহসিক পুরুষেরা এবং দস্যুতস্করেরাই ন্যায়বিচারের বিধিব্যবস্থাসমূহ ব্যাখ্যা করিত। তৎকালে প্রত্যেকেই এক একজন প্রধান হইয়া উঠিয়াছিল। ইতোমধ্যে ইউরোপীয়রা রঙ্গস্থলে অবতীর্ণ হইলেন। তাঁহাদের ব্যবসায় বাণিজ্য-সংক্রান্ত দ্বেষাদ্বেষি ও বিবাদবিসংবাদসমূহ তৎকালীন বিশৃঙ্খল অবস্থার পরিমাণ শতগুণে বর্দ্ধিত করিয়া তুলিল।

 হিন্দুরা কি ভাবে বিচার কার্য্য নির্ব্বাহ করিতেন, তৎসম্বন্ধে আমরা কোন কথাই বলি নাই। আমাদিগের গ্রন্থের আয়তন আমাদিগকে তদ্বিষয়ে পূর্ণ আলোচনা করিতে দিতেছে না। মনুর ব্যবস্থা এবং অন্যান্য কতিপয় স্মৃতিগ্রন্থ হইতে দেওয়ানী, ফৌজদারী, মিউনিসিপাল ও অপরাপর বিষয়সংক্রান্ত হিন্দু-ধর্ম্মাধিকরণসমুহের পূর্ণতত্ত্ব অবগত হইতে পারা যায়। ঐ সকল পুস্তকের অনেকগুলিই অধুনা ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হইয়া প্রকাশিত হইয়াছে। সুতরাং ইংরেজী ভাষাভিজ্ঞ পাঠকগণ ঐ সমস্ত অনুবাদ পাঠ করিলে অনেক জ্ঞান লাভ করিতে পারেন। ইংরেজ-শাসনকালের প্রথম অবস্থায় “জাতিমালা-কাহারী” নামে একটি হিন্দু বিচারালয় ছিল। তৎপ্রসঙ্গে ওয়ারেন হেষ্টিংস সাহেব লিখিয়াছেন,—“সাধারণতঃ জাতিমালা কাছারী নামে অভিহিত জাতিবিষয়ক বিচারালয়টি গভর্ণমেণ্টের