পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৮
কলিকাতার ইতিহাস।

কোর্ট প্রতিদ্বন্দিভাবে পরস্পরের প্রতি ঈর্ষাপূর্ণ নেত্রে দৃষ্টিপাত করিতে লাগিল, এবং তাহার ফলে বিচার ও শাসনসংক্রান্ত উর্দ্ধতন কর্মচারীরা বিবদমান প্রতিপক্ষরূপে পরস্পরের প্রতিকূলে দণ্ডায়মান হইলেন। চীফ্ জষ্টিস্ এবং তাঁহার সহযোগী বিচারপতিগণ মনে করিতে লাগিলেন, কেবল কলিকাতার উপর কেন, কোম্পানির অধিকারস্থ তাবৎ ভূভাগের উপরই তাঁহাদের একাধিপত্য আছে। এই সময়ে এরূপ কথা ও জনশ্রুতি রটিতে লাগিল যে, এই সকল বিচারপতি যখন ইংল্যাণ্ডের রাজা ও পার্লামেণ্ট সভা হইতে ক্ষমতা লাভ করিয়াছেন এবং যখন তাঁহারা কোন মতেই এ দেশের প্রধান শাসনকর্ত্তার অধীন নহেন, তখন তাঁহারা ইচ্ছা করিলে স্বল্পং গভর্ণর জেনারেল ও তাঁহার মন্ত্রিগণকে পর্য্যন্ত গ্রেপ্তার করিতে পারেন। মেকলে সাহেব স্বীয় স্বাভাবিক ওজস্বিনী ভাষায় এই অবস্থার যে সমুজ্জ্বল চিত্র অঙ্কিত করিয়াছেন, তাহা কিয়দংশে উর্ব্বর মস্তিষ্কের কল্পনাপ্রসূত অতিরঞ্জন হইলেও তাহাতে ইহার অনেকটা আভাস পাওয়া যায়। তিনি লিখিয়াছেন;—“এই ইংরেজ ব্যবহারাজীবগণের আগমনে দেশ মধ্যে যে বিভীষিকার সঞ্চার হইয়াছিল; কোনও মারহাট্টা-আক্রমণেও তাহা হয় নাই। সুপ্রীম কোর্টের সুবিচারের তুলনায় পূর্ব্ববর্তী প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উৎপীড়কদিগের যাবতীয় অবিচারই পরম সুখকর বলিয়া প্রতীয়মান হইত!”

 অবশেষে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিগণ যখন মফস্বলের প্রাদেশিক বিচারালয়গুলি বিধিসঙ্গতরূপে স্থাপিত কি না এই তর্ক উপস্থিত করিলেন, তখনই বুঝা গেল তাঁহাদের খেয়াল চরম সীমায় উঠিয়াছে। অতঃপর কাশীজোড়ার রাজার সুপ্রসিদ্ধ মোকদ্দমায় সুপ্রীম কাউন্সিল এবং সুপ্রীম কোর্ট প্রকাশ্য সম্মুখ যুদ্ধে প্রবৃত্ত