পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম অধ্যায়
২৩৭

হয়, তাহাই বুঝাইবার নিমিত্ত এক সময়ে একটি দেশীয় সংবাদপত্রে একটি বিদ্রুপাত্মক চিত্র প্রকাশিত হইয়াছিল। উহার মর্ম্ম এইরূপ;—দুই ভ্রাতার পৈতৃক একটি দুগ্ধবতী গাভী ছিল। গাভীটীর বিভাগ ও বণ্টন লইয়া ভ্রাতৃদ্বয় বিবাদে প্রবৃত্ত হইল। চিত্রে এক ভাই গাভীর শৃঙ্খল ধরিয়া এবং অপর ভাই তাহার পুচ্ছ ধরিয়া টানাটানি করিতেছে; সেই অবকাশে উকিল বাবু গাভীটী দোহন করিয়া দুধটুকু বাহির করিয়া লইতেছেন।

 পূর্ব্বোক্ত বিচারালয় ব্যতীত অন্যান্য যে সকল অফিস আদালত কলিকাতায় স্থাপিত হইয়াছে, স্থানাভাববশতঃ সে সকলে কথা এস্থলে কিছুই বলিতে পারা গেল না। বর্ত্তমান শাসনপ্রণালী যে, এতদ্দশীয়দিগের আচারব্যবহার, রীতিনীতি ও মনোভাবের বিশেষ পরিবর্ত্তন সাধন করিয়াছে, তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। বস্তুতঃ শাসনকার্য্যপরিচালনের পাশ্চাত্য প্রথাটী এদেশে সম্পূর্ণ নূতন। প্রজাসাধারণের মস্তকে যে গুরুতর ব্যয়ভার পতিত হইয়াছে, তাহা বহন করা নিতান্ত ক্লেশকর হইয়া পড়িছে। বর্ত্তমান শাসনপ্রণালী হইতে যে সমস্ত উপকার ও সুবিধা লাভ হইয়াছে, তাহা অত্যন্ত অধিক মূল্যে ক্রয় করিতে হইতেছে। এই পরগাছা হইতে যে নানা কুফলও না ফলিতেছে, এরূপও নহে। এ কথা সত্য যে, আমাদের ইংরেজশাসনকর্ত্তৃগণ অতি উন্নত ও মার্জ্জিত ভাব এবং সাধু উদ্দেশ্য লইয়া এদেশের শাসনসংস্কারে অগ্রসর হইয়াছিলেন। পরন্তু তাঁহাদের সদুদ্দেশ্য সত্ত্বেও প্রকৃতপক্ষে যে উপকার লাভ হইয়াছে, তাহা অবিমিশ্র শুভজনক নহে। এই বিশাল সাম্রাজ্যের অধিবাসিবর্গের বিদ্যাবুদ্ধিবিষয়ক নৈতিক ও সাংসারিক উন্নতিকল্পে যে সকল বিধিব্যবস্থা প্রণীত হইয়াছে, তাহার তত্ত্ব আলো