পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম অধ্যায়।
২৩৯

বেগে বৃদ্ধি ও পুষ্টি লাভ করিতেছে। ইংল্যাণ্ডের মহাবাগ্মী চেদাম যে সমস্ত প্রসিদ্ধ বক্তৃতা দ্বারা অমরত্ব লাভ করিয়াছেন, তাহার এক স্থলে সংবাদপত্রকে বায়ুর ন্যায় সর্ব্ববন্ধনমুক্ত ও অব্যাহত বলিয়া বর্ণন করিয়াছেন। এই সংবাদপত্রের রাজনীতি-সমালোচক আরাম কেদারায় অর্দ্ধশয়ান অবস্থায় আরাম করিতে করিতে রাজা, সেনাপতি, রাজমন্ত্রী, ধর্ম্মযাজক ও জনসাধারণকে স্ব স্ব কর্ত্তব্য সম্বন্ধে উপদেশ প্রদান করিতে কিছুমাত্র সঙ্কোচ বোধ করে না। ইহা চরিত্রহীন ব্যক্তিদিগকে চরিত্র দান করিয়া থাকে।

 সংবাদপত্রের প্রকৃতি এইরূপ। সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, সিসিরো ও ডিমস্থিনিস যৎকালে বক্তৃতাদ্বারা জগৎকে মুগ্ধ করেন, তৎকালে সংবাদপত্রের শক্তি বিকশিত হয় নাই। আধুনিক বাগ্মিগণকে বক্তৃতা করিতে বা প্রবন্ধ পাঠ করিতে বিস্তর অসুবিধা ভোগ করিতে হয়। কারণ তাঁহারা জানেন যে, যে নবশক্তি সদা আত্মাভিমানে মত্ত ও যাহার নিকট কোন ব্যক্তির, কোন ধর্ম্মের পরিত্রাণ নাই, সেই শক্তি অচিরে তাঁহাদের উক্তি তন্ন তন্ন করিয়া পরীক্ষা করিবে এবং সর্ব্বজনসমক্ষে উপস্থিত করিয়া তাহার সমালোচনা করিবে। কথিত আছে যে, “সিজারের মহিষী সর্ব্বপ্রকার নিন্দা ও সন্দেহ হইতে মুক্ত হইবে।” কিন্তু মহাপ্রভাবশালী সংবাদ পত্রের নিকট তাঁহাকেও মস্তক নত করিতে হয়; নচেৎ উহা এক সময়ে সুযোগ পাইয়া তাঁহাকে আক্রমণ করিবে এবং তাঁহার চরিত্রের দোষ উদঘাটন করিতে সঙ্কুচিত হইবে না। বস্তুতঃ ইহা “শিক্ষকগণকেও শিক্ষা দিয়া থাকে”। ইহাই বিস্ময়ের বিষয় যে, চারিশত বৎসর কালের মধ্যে ইহা এতাদৃশ প্রভাবসম্পন্ন হইয়া উঠিয়াছে এবং এরূপ অনির্ব্বচনীয় ক্ষমতা পরিচালন করিতে পারি-