পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়।
২৫

সাহেব কলিকাতার গভর্ণর ছিলেন। দিল্লীতে ইংরেজপক্ষের দুঃখদুর্দ্দশার কথা নিবেদন করিবার নিমিত্ত যে সরম্যান্‌, ই ষ্টিফেন্সন নামক দুইজন সাহেব এবং আর্ম্মানী খোজা সর্হেড দূতরূপে নির্ব্বাচিত হইলেন। তাঁহারা উপঢৌকনস্বরূপ নানাপ্রকার অতি সুদৃশ্য ও মনোহর কাচের জিনিষ, ঘড়ি, খেলেনা, কিঙখাপ, এবং সর্ব্বোৎকৃষ্ট সূক্ষ্ম পশমী ও রেশমী কাপড় সঙ্গে লইলেন। এই দূতদল দিল্লীর উদ্দেশে যাত্রা করিয়া পথে থাকিতে থাকিতে সম্রাট্‌ ফরুকশিয়ার এরূপ একটি উৎকট রোগে আক্রান্ত হইলেন যে, তাহাতে অস্ত্র-চিকিৎসকের সহায়তা আবশ্যক হইয়া উঠিল। খা ঁদুরন নামক সম্রাটের এক বিশ্বস্ত অমাত্য ইংরেজদিগের প্রতি অনুকূল ছিলেন। তাঁহারই অনুগ্রহে ও যত্নে ডাক্তার হ্যামিল্‌টনকে সম্রাটের চিকিৎসার্থে আহ্বান করা হইল। ডাক্তার সাহেবের অস্ত্রচিকিৎসার গুণে সম্রাট্‌ অচিরে আরোগ্যলাভ করিলেন। ইহাতে তিনি সাতিশয় সন্তুষ্ট হইয়া ইংরেজ ডাক্তারকে যথোচিত পারিতোষিক প্রদান করিবার অভিলাষ প্রকাশ করিলেন। ডাক্তার হ্যামিল্‌টন সেই সময়ে প্রার্থনা করিলেন যে, সম্রাট্‌ যেন অনুগ্রহ করিয়া ইংরেজ দূত দলের আবেদন পূর্ণ করেন। অতঃপর দূতগণ ১৭১৫ অব্দে দিল্লীতে উপিস্থত হইলেন। সম্রাট্‌, হ্যামিল্‌টন সাহেবের এইরূপ নিঃস্বার্থ-পরতায় বিমুগ্ধ হইয়া দূতদলের আবেদন বিশেষরূপ অনুকুলভাবে বিবেচনা করিবেন, এ কথা তৎক্ষণাৎ সন্তুষ্টচিত্তে স্বীকার করিলেন। এই সময় মারওয়ার-অধিপতি অজিতসিংহের কন্যা ইন্দ্রকুমারীর সহিত সম্রাটের বিবাহ ব্যাপার উপস্থিত হইল। সুতরাং সম্রাটের দূতদলের আবেদন শ্রবণে কিঞ্চিৎ বিলম্ব ঘটিয়া যাইল। অবশেষে ১৭১৬ খ্রীষ্টাব্দে সম্রাটের নিকট আবেদন পেশ করা হইল।