রোপীয়দিগের মধ্যে প্রাতঃকালের শীতল বায়ু সেবন করিবার নিমিত্ত প্রত্যুষে গ্রাত্রোথ্থান করিবার প্রথা প্রচলিত ছিল, কারণ সূর্য্যোদয়ের পূর্ব্বে বায়ু বিলক্ষণ মনোরম থাকে। বর্তমান সাকুলার রোড ও পেরিনের বাগান[১] প্রভৃতি স্থানগুলি এক সময়ে সৌখীনদিগের বিচরণ-স্থল ছিল। অধুনা গোল দীঘি নামে খ্যাত ‘মেছোপুকুর’ ও চাঁদপাল ঘাট এতদুভয়ের মধ্যবর্তী আরও কতকগুলি প্রিয় বিহার-ক্ষেত্রের উল্লেখ আছে। পদব্রজে বেড়াইবার প্রথাও প্রচলিত ছিল। কথিত আছে যে, সার্ উইলিয়াম জোন্স তাঁহার খিদির পুরের বাড়ী হইতে প্রতিদিন ওল্ড কোর্ট হাউস স্ত্রীটের নিকটস্থ সুপ্রীম কোর্টে হাঁটিয়া যাইতেন [২] তৎকালে গভর্ণর এবং গভর্ণমেন্টের মেম্বরগণ শোভাযাত্রার আকারে সজ্জিত হইয়া প্রতি রবিবারে গির্জ্জায় হাঁটিয়া যাইতেন। পরন্তু কলিকাতার অস্থিত একটি সুন্দর ঘোড়দৌড়ের মাঠই ব্যায়ামের অর্থাৎ গাড়ীর ভিতর বসিয়া ঝিমাইবার প্রসিদ্ধ স্থান ছিল,—উহা প্রাতঃকালে ও সায়ংকালে হাওয়া খাওয়ার এক প্রকার সৌখীনের মেলা ছিল,— তথায় “লোকের উদরে এক গ্রাস হাওয়া প্রবেশ করিতে না করিতে
- ↑ পেরিনের বাগান বর্তমান বাগবাজারের নিকটে কোনও স্থানে অবস্থিত ছিল। হলওয়েল সাহেব ১৭৫২ অব্দে উহা বিক্রয় করিয়া ফেলেন।
- ↑ ইউরোপীয় অধিবাসীদিগের প্রাতে ও সায়াহ্নে পদচারণার্থ “রেম্পন্ডেসিয়া ওয়াক্” একটা অতি প্রিয় স্থান ছিল। সায়াহ্ন ৫ টা হইতে ৮টা পর্যন্ত কেবলমাত্র ইউরোপীয়দিগেরই তথায় বিহারের অধিকার ছিল ঐ সময়ে দেশীয় লোকদিগের তথায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এই নিয়ম যথাযথভাবে প্রতি গালন করাইবার জন্য কপাটে পোলের নিকট শান্ত্রী (প্রহরী) থাকিত। এই বিহার স্থানটী চাঁদপালঘাট ও দুর্গ এতদুভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল।