পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
কলিকাতার ইতিহাস।

বিষম লোমহর্ষণ কাণ্ড সংঘটিত হইল, তাহারই ফলে কিছু কাল পরে দেশের শাসনভার মোগলদিগের হস্তচ্যুত হইয়া ইংরেজদিগের করতলগত হইল।

 যৌবনের উন্মেষ হইতে না হইতেই নবাব সিরাজুদ্দৌলা অত্যন্ত অসচ্চরিত্র ও লম্পটস্বভাব হইয়া উঠিলেন। তাঁহার ঔদ্ধত্য ও দুশ্চরিত্রতায় বঙ্গদেশের ধনাঢ্য লোকেরা সর্ব্বদা সশঙ্ক অবস্থায় কালযাপন করিতে লাগিলেন। কখন্‌ কাহার কি বিপদ্‌ ঘটে, কখন্‌ কাহার ধন, মান, বা প্রাণ যায়, এই দুর্ভাবনায় সকলকে সতত উদ্বিগ্ন থাকিতে হইত। এই সময়ে ঢাকার শাসনকর্ত্তা রাজা রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাস নবাবের ভয়ে উড়িষ্যায় জগন্নাথ দেবের দর্শনোদ্দেশে তীর্থ ভ্রমণের ব্যপদেশে সমস্ত ধনসম্পত্তি সহিত কলিকাতায় পলাইয়া আঁসিলেন। তৎপূর্ব্বেই ইংরাজদিগের সহিত তাঁহার বন্দোবস্ত হইয়াছিল যে, যদি তিনি কলিকাতায় আসেন, তাহা হইলে ইংরেজরা সাহায্য করিয়া তাঁহাকে রক্ষা করিবেন। সিরাজুদ্দৌলা যখন শুনিলেন যে, কৃষ্ণদাস ঢাকা হইতে পলায়ন করায়, তাঁহাকে “জবাই” করিতে পারা যায় নাই, তখন তিনি ক্রোধে অধীর হইয়া ইংরেজদিগের প্রতি আদেশ করিলেন যে, তাঁহারা যেন অবিলম্বে কৃষ্ণদাসকে তাঁহার যাবতীয় সম্পত্তি সহিত নবাবের লোকের হস্তে অর্পণ করেন। ইংরেজরা অবশ্য এ কথায় কর্ণপাত করিলেন না। সিরাজ বাল্যকাল হইতেই ইংরেজদিগের বিষম বিদ্বেষ্টা ছিলেন। কৃষ্ণদ সসম্পর্কীয় এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইলেন এবং স্থির করিলেন যে, ইংরেজদিগকে কেবল কাঠার শাস্তি প্রদান করিয়াই ক্ষান্ত হইবেন না, পরন্তু তাহাদিগকে একেবারে বাঙ্গালা হইতে দূরীভূত করিয়া দিবেন। নবাবের এইরূপ ভাব দেখিয়া ইংরেজরা অত্যন্ত ভয়াভি-