পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়।
২৯

ভূত হইয়া পড়িলেন, কিন্তু ঢাকার শাসনকর্ত্তা রাজা রাজবল্লভ তাঁহাদিগকে এই বলিয়া আশ্বস্ত করিলেন যে, নবাবের যাবতীয় সর্দ্দার ও অমাত্যবর্গ নবাবের প্রতিকূলে ইংরেজদিগকে সাহায্য করিবেন। ইতোমধ্যে নবাবের অমাত্য ও সর্দ্দারদিগের সহিত অতি গোপনে পত্র লেখালেখি ও কথাবার্ত্তা চলিতে আরম্ভ হইল, আর এই দুষ্কর কার্য্য সংসাধন জন্য নবকৃষ্ণ দেবকে নিযুক্ত করা হইল।

 সিরাজুদ্দৌলা বিপুল সেনাবল-সমভিব্যাহারে কলিকাতা আক্রমণ করিলেন। গভর্ণর ড্রেক সাহেব ও অপরাপর বহু ইংরেজ একখানি জাহাজে আরোহণ করিয়া ফলতায় পলায়ন করিলেন। এই দুর্দ্দশার সময়ে, নবাবের নিষেধ সত্ত্বেও, নবকৃষ্ণ ফলতায় ইংরেজ-পলাতকদিগকে গোপনে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করিতে লাগিলেন এবং নবাবের গতিবিধি-সংক্রান্ত অতি প্রয়োজনীয় সংবাদসমূহ তাঁহাদিগকে প্রদান করিতে লাগিলেন। অবশিষ্ট ইংরেজের নবাবের আক্রমণে বাধা দিতে লাগিলেন; কিন্তু পরিশেষে পরাজিত হইয়া বন্দী হইলেন। বন্দিগণ একটি ক্ষুদ্র কারাগৃহে নিক্ষিপ্ত হইলেন; উহা এক্ষণে “অন্ধকৃপ” নামে খ্যাত। সেই সঙ্গে নবাব ‘কলিকাতা’ এই নাম পরিবর্ত্তিত করিয়া ‘আলিনগর’ নাম রাখিলেন এবং রাজা মাণিকচন্দ্রকে ঐ স্থানের শাসনকর্ত্তা নিযুক্ত করিলেন। ১৭৫৮ অব্দের জানুয়ারী মাসে মিরজাফরের সনন্দ অনুসারে আলিনগরের পরিবর্ত্তে নগরের নাম আবার কলিকাতা রাখা হইল।

 এস্থলে অন্ধকূপের ভীষণ যন্ত্রণার বর্ণনা করা আবশ্যক। সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ও লেখক মেকলে সাহেব “লর্ড ক্লাইভ” প্রবন্ধে এ সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেন, তাহার মর্ম্ম উদ্ধৃত করিলেই যথেষ্ট হইবে। তিনি লিখিয়াছেন:— ‘অতঃপর সেই ভয়ঙ্কর অপরাধ অনুষ্ঠিত হইল