পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ অধ্যায়।
৩৪৫

পাতিব্রত্যের শ্রেষ্ঠ পূণ্যজনকত্ব, সত্যের পবিত্রতা, মিথ্যা-কথনের উৎকট পাপ, এই সমস্ত বিষয় এরূপ চিত্তদ্রাবকভাবে ওজস্বিনী ভাষায় উপদিষ্ট হইয়াছে যে, যাহারা নিতান্ত অমনোযোগের সহিত রামায়ণ পাঠ করে, তাহাদের মনেও উহাদের ভাব গভীররূপে অঙ্কিত হইবেই হইবে। পুরাণে উক্ত হইয়াছে,—“সংসারে মিথ্যাবাদীর স্থান হয় না।” রামায়ণকার ইহার অনুমোদন করিয়া স্বীয় গ্রন্থে উদ্ধৃত করিয়াছেন। রাম অগস্ত্যমুনির আশ্রমে যাইয়া যৎকালে তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করেন, সেই সময়ে মহর্ষি তাঁহাকে বলেন,—“মিথ্যাবাদী পরলোকে আপনার মাংস আপনি খাইয়া থাকে।”

 এইরূপ একটি গল্প প্রচলিত আছে যে, বুদ্ধদেব যৎকালে স্বীয় আশ্রমে ধ্যানমগ্ন, সেই সময়ে একটী বিধবা তাঁহার নিকট যাইয়া আপনার মৃত পুত্রের পুনজীবন প্রার্থনা করে। বুদ্ধ বৃদ্ধাকে উত্তর করেন, যে বাটীতে মৃত্যু প্রবেশ করে নাই, সেই বাটী হইতে তুমি যদি কঞ্চিৎ তিল আনিয়া দিতে পার, তাহা হইলে তোমার পুত্রের পুনজীবন লাভের উপায় হইতে পারে। বৃদ্ধা সানন্দে চলিয়া গেল, কিন্তু সেরূপ বাটী কোথাও খুঁজিয়া পাইল না। তখন সে হতাশ হইয়া বুদ্ধের নিকট প্রত্যাগত হইল এবং নিবেদন করিল যে, যে বাটীতে কেহ কখনও মরে নাই, এরুপ বাটী সংসারে নাই। যেরূপ মৃত্যু-বর্জ্জিত বাটী নাই, সেইরূপ দোষ-বর্জ্জিত সমাজও নাই। সূক্ষ্মরূপে পরীক্ষা করিলে সকল সমাজেই দোষ বাহির করিতে পারা যায়। পরন্তু ছিদান্বেষণ অপেক্ষা গুণগ্রাহিতা অধিকতর হিতকর।

 যে সমাজ নানাপ্রকার বিপ্লব ও কালের ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করিয়া দণ্ডায়মান আছে এবং যে সমাজে সংসারের সকল বিভাগেই