পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ অধ্যায়।
৩৪৭

রক্ষা করিতে সমর্থ হইয়াছিল। জাতিভেদপ্রণালীর গুণে গ্রাম্যসমিতিসমূহ সমাজে এক একটী ক্ষুদ্র প্রজাতন্ত্ররাজ্যরূপে পরিণত হইয়াছিল। মুসলমানধর্ম্মের শক্তি এই সুদৃঢ় গঠনপ্রণালী ভেদ করিতে পারে নাই। এই প্রথার গুণে যে সহিষ্ণুতাশক্তি বিকশিত হয়, তাহাই হিন্দুচরিত্রের মূল; উহারই বলে হিন্দুরা অগ্নি ও তরবারির গতিরোধে সমর্থ হইছিল। হিন্দুকে ‘মৃদুপ্রকৃতি’ বলা হয় বটে, কিন্তু উহা নিন্দাসূচক নহে! কারণ হিন্দু, পরদ্রোহী নহে,—হিন্দু স্বধর্ম্মে অটল ও ক্লেশসহিষ্ণু।

 ভূয়োদর্শন দ্বারা প্রতিপন্ন হইয়াছে যে, অনুকরণ সকল স্থলে সমাজের উন্নতি ও সুখসাধনের কারণ হয় না,—উহা সকল সময়ে আমাদের উপকারজনক হইতে পারে না। লোক যথার্থই বলিয়াছেন,—“বীজ উপযুক্ত মৃত্তিকা পাইলেই অঙ্কুরিত হয়; মনোমুগ্ধকর নীতি ও সিদ্ধান্ত পাইলেই লোক অনেক সময় তাহা অবলম্বন করিয়া বসে, কিন্তু তাহার বিরুদ্ধে বলিবার যে অনেক কথা আছে, তাহা ভুলিয়া যায় এবং যে সমস্ত সুযুক্তি দ্বারা তাহারা রক্ষিত ছিল তাহা অগ্রাহ্য করে।” অতএব কোনও নতুন বিষয়ই সম্যক‌্ বিবেচনা না করিয়া প্রবর্ত্তিত করিবার চেষ্টা করা উচিত নয়, পরন্তু সমাজের বিশেষ বিশেষ ভাবগুলি প্রগাঢ় মনোযোগের সহিত বিচার করিয়া দেখা কর্ত্তব্য। এ সম্বন্ধে ম্যাক্সমুলার যাহা বলিয়াছেন, তাহা বড়ই সঙ্গত বলিয়া বোধ হয়। তিনি বলিয়াছেন,—“যাহারা আপনাদের অতীত ইতিহাসে ও সাহিত্যে গৌরব বোধ না করে, তাহারা আপনাদের জাতীয় চরিত্রের প্রধান অবলম্বন হারাইয়া বসে।”

 অন্যান্য সকল সমাজের ন্যায় আমাদের সমাজেরও কতিপয়