পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
কলিকাতার ইতিহাস।

কলিকাতার ইতিহাস। না হইতে সংবাদ আসিল যে, ইউরোপে ইংল্যাণ্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে সমর ঘোষিত হইয়াছে; সুতরাং এদেশে ফরসীদিগের শক্তির ক্ষয়সাধন করা ইংরেজদিগের একটি প্রধান উদ্দেশ্য হইয়া পড়িল। সিরাজুদ্দৌলা কলিকাতার কাউন্সিলে বলিয়া পাঠাইলেন যে, যদি ইংরেজরা তাঁহার রাজ্যে যুদ্ধ পরিচালনা করেন, তাহা হইলে তিনি যথাসাধ্য ফরাসীদিগের সহায়তা করিবেন। সে যাহা হউক, ইংরেজরা প্রবল আক্রমণের পর চন্দননগর অধিকার করিলেন এই ব্যাপারে নবাব অসন্তোষের চিহ্ন প্রকাশ করায় স্থির হইল যে, সিরাজুদ্দৌলার পুর্ব্বাধিকারী (মাতামহ) আলিবর্দ্দি খাঁর ভগিনীপতি মিরজাফর আলি খাঁর পক্ষসমর্থন করিয়া সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করা হইবে। অতঃপর পলাশীক্ষেত্রে একটী চূড়ান্ত যুদ্ধ হইল। সেই যুদ্ধে নবাবের সৈন্যগণ পরাজিত হইয়া চতুর্দ্দিকে ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল এবং নবাব নিজে ফকিরের বেশে রাজধানী হইতে পলায়ন করিতে বাধ্য হইলেন। কিন্তু তিনি অচিরে ধৃত হইয়া মুর্শিদাবাদে আনীত হইলেন। মিরজাফরের জ্যেষ্ঠ পুত্র, নবাব সিরাজুদ্দৌলার মস্তক ছেদন করিলেন। ইতঃপূর্ব্বে জাফর আলি খাঁর সহিত মুন্সি নবকৃষ্ণের পত্র লেখালেখি হওয়ায় জাফর আলি এই যুদ্ধে যোগদান করেন নাই। তিনি এক্ষণে কর্ণেল ক্লাইভের সহিত মিলিত হইলে, ক্লাইভ্‌ মুর্শিদাবাদ অধিকার করিয়া জাফর আলি খাঁকে বাঙ্গালার প্রকৃত নবাব বলিয়া ঘোষণা করিলেন। কর্ণেল ক্লাইভের অনুমোদনক্রমে মুন্সি নবকৃষ্ণ[১] নবাব জাফর আলি খাঁর সহিত সুবাদারী সন্ধির যাবতীয় নিয়মাদি স্থির করিলেন।


  1. সরকারি কাগজপত্রে দেখা যায় যে, মিরজাফর জগৎশেঠকে তাঁহ’র প্রতিনিধিরূপে নিযুক্ত করিয়াছিলেন, কিন্তু নবকৃষ্ণ ১৭৭৭ সালের ১৪ই নভেম্বর