পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অধ্যায়।
৫১

যে, কলিকাতায় সংবৎসরে এক ইঞ্চির সহস্রতম ভাগে গড় বাষ্প ৭৬১, কিন্তু লণ্ডন নগরে ইহার অর্ধ অপেক্ষাও অল্প, মোটে ৩৭ মাত্র; পক্ষান্তরে, বায়ুতে আর্দ্রতার অনুপ্রবেশ ১০ রিলে, সংবৎসরের গড় পারস্পরিক আর্দ্রতা ৭৬ মাত্র; কিন্তু লণ্ডনে উহা অপেক্ষা অনেক অধিক, ৮৯। ব্ল্যানফোর্ড সাহেব আরও বলেন যে, “বায়ুর তাপশৈত্যের ভাবের পর, এই দুই স্থানে যাহা কিছু স্বাস্থ্যের পরিবর্ত্তন সংঘটিত করে, তাহাদের মধ্যে এই বায়বীয় আর্দ্রতার পার্থক্য সর্ব্বাপেক্ষা অধিক গুরুত্ববিশিষ্ট কারণ বলিয়া বোধ হয়।”

 ব্ল্যানফোর্ড সাহেবের সুবিস্তৃত হিসাব ও তাকা অনুসারে কলিকাতার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় ৬৬০০৪ ইঞ্চি, কিন্তু ইহার ১০০ মাল অপেক্ষা অল্প নিম্নস্থ সাগরদ্বীপে উহা অপেক্ষা অনেক অধিক অর্থাৎ ৮২-২৯ ইঞ্চি।

 বায়ুমান দ্বারা নির্ধারিত হইয়াছে যে, কলিকাতার বায়বীয় চাপের গড় সাগরতলের ১৮ ফুট উর্দ্ধে ২৯৭১৩ ইঞ্চি। কলিকাতাবাসীরা অনেকবার ভীষণ ঝটিকাবর্ত্তের হস্তে বহু দুর্ভোগ ভুগিয়াছে; এই সকল ঝড় বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত হইয়া কলিকাতার বিষম সর্বনাশ সাধন করিয়াছে। এই সমস্ত ঝটিকাবর্ত্ত সাধারণতঃ বৎসরের মধ্যে দুইটি নির্দিষ্ট সময়ে সমাগত হইয়া থাকে—দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রারম্ভকালে একবার এবং উহার অবসান কালে আর একবার। শেষোক্ত সময়ে যে সকল ঝড় হয়, সেগুলি সাধারণতঃ উপসাগরের উচ্চতর অংশে উৎপন্ন হইয়া থাকে, কিন্তু বায়ুমানযন্ত্রে তাহাদের আগমনের কোনও কারণ নিদর্শন প্রায়ই সূচিত হয় না।