পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
কলিকাতার ইতিহাস।

এই উর্বর ভূখণ্ডে চিরবসন্ত বিরাজমান থাকিলেও ইহা অন্ধকারময় কারাগার, খেতভূমি, ব্যাধিনিকেতন ও যমালয় স্বরূপে পরিগণিত হইত। বোধ হয়, য়্যাটকিন্সন সাহেবের কবিতা নগরে, তদনীন্তন অবস্থা সুন্দর রূপে বর্ণন করিতেছে। সেই কবিতায় মর্ম এইরূপ;

 “হে কলিকাতে! তোমার অবস্থা তখন কি ছিল? তোমাকে তখন উদ্বিগ্নহৃদয়ে অতি কষ্টেসৃষ্ট জীবন ধারণ করিতে হইত: তখন তোমার অঙ্গ নিবিড় জঙ্গলে ও অনিষ্টকর জলায় সমাচ্ছন্ন ছিল; তাহাতে অনেক সাহসী উচ্চাভিলাষী লোককেই প্রাণ দিতে হইয়াছে, চতুর্দিকে উচ্চ উচ্চ বৃক্ষসমুহ আলোক রুদ্ধ করিত এবং ইউপাস্ তরুর ন্যায় বিষাক্ত বাষ্প উদগীর্ণ করিত; দিনমান প্রগাঢ় উত্তাপে জ্বলিতে থাকিত এবং তিমিরাচ্ছন্ন রজনা অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও জ্বরসঙ্কুল শয্যা আনয়ন করিত; সায়ংকালে যে সকল পর্যটক সজীব ছিল, প্রভাতে তাহারা জীবনশুন্য হইত।”

 ১৬৯০ খৃষ্টাব্দে কাপ্তেন হ্যামিলটন একটি হাসপাতালের কথা বলিয়াছেন যে, অনেক রোগী তাহাতে প্রবেশ করিয়াছিল বটে কিন্তু অতি অল্প লোকই জীবিত অবস্থায় সেখান হইতে বহির্গত হইয়া আপনাদের চিকিৎসাবিবরণ প্রচার করিয়াছিল। সর্ব্বদা, রৌদ্র, বৃষ্টি, হিম প্রভৃতির প্রভাবাধীনে অবস্থান ও উগ্রবীর্য্য সুর। পান জন্য যে এক প্রকার রোগ উৎপন্ন হয়, তাহাতে এক এক জাহাজের সমস্ত লোকজনের মধ্যে গড়ে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মৃত্যুমুখে পতিত হইত। তৎকালে মৃত্যু-সংখ্যা যে অত্যন্ত অধিক ছিল, সাহেবদিগের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া-সাধকগণের (মুর্দ্দফরাসিদিগের) বিপুল অর্থোপার্জনই তাহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। বর্ষকালেই তাহাদের উপা-