পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
কলিকাতার ইতিহাস

মৃতদেহও ক্রমাগত কয়েক দিন যাবৎ প্রখর রৌদ্রে রাস্তায় পড়িয়া পচিতে থাকিত। শৃগাল ও অন্যান্য পশু সেই সকল পচা শবদেহ একাদিক্রমে কয়েক দিন পর্যন্ত খাইতে থাকিত। তৎপরে সেই মৃতদেহ নদীতে ফেলিয়া দেওয়া হইত,—সময়ে সময়ে পুষ্করিণীতেও যে নিক্ষেপ করা না হইত, তাহাও নহে।

 সেকালে ব্ল্যাকিয়ার নামক কলিকাতাবাসী একজন সাহেব সমাজে বেশ সুপরিচিত ছিলেন। তিনি ট্যাঙ্ক স্কোয়ার (বর্তমান নাম ড্যালহাউসি স্কোয়ার) নামক স্থানে বন্য পক্ষী শিকার করি- তেন। ঐ সাহেব বলিয়াছেন, ১৭৯৬ অব্দের জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারি মাসে বসন্ত মহামারী উপস্থিত হইয়া অনেক মানুষ ও গবাদি গৃহপালিত পশুর প্রাণসংহার করিছিল। ১৮০২ খৃষ্টাব্দে, মাদ্রা- জের ফিজিশিয়ান জেনারল ডাক্তার জেমস আণ্ডাসন কলিকাতার ইংরেজ উপনিবেশে টিকা দিবার প্রথা প্রবর্তিত করেন। তিনি দুইটি ইউরোপীয় বল ককে গো-বসন্তের বীজে টিকা দিয়া তাহা- দিগকে জাহাজে করিয়া ফোর্ট উইলিয়ামে প্রেরণ করিয়াছিলেন। উইলিয়াম রসেল নামক একজন সাহেবই কলিকাতায় গোবীজে টিকা দিবার প্রণালী প্রথম আরম্ভ করেন এবং গবর্ণমেণ্ট তাঁহাকে বাঙ্গালা প্রেসিডেন্সিতে ডাক্তার জেনারের আবিষ্কারের সুফলের অধিকতর প্রসারসাধনবিষয়ে তত্ত্বাবধান করিবার নিমিত্ত নিযুক্ত করেন। এই সময়ে (১৮০২) আর একটী মহোপকার- জনক ব্যবস্থা প্রণীত হয়; পূৰ্বে কতকগুলি ভ্রান্ত হিন্দু বিপথে চালিত হইয়া গঙ্গাসাগরে (সাগরদ্বীপের নিকট সমুদ্রে) সন্তান ভাসাইয়া দিত; গবর্ণমেণ্ট আইন করিয়া এই নিষ্ঠুর প্রথা রহিত করিয়া দিলেন। শাস্ত্র কোনও কালেই এই অমানুষিক নির্দ্দয়