পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অধ্যায়

অল্পদিনের নহে। কবিকঙ্কণ লেখেন:—

শকে রস রস বেদশশাঙ্ক গণিতা।
কব কত দিল পীত হরের বণিত॥

“অঙ্কস্য বামগতি’ এই নিয়মে গণনা করিলে চণ্ডীগ্রন্থ ১৪৬৬ শকে প্রস্তুত বিধায় ইহাই প্রমাণ হইতেছে কলিকাতা গ্রাম তিনশত বৎসরেরও অনেক পূর্ব্বে বর্তমান ছিল।

অপর, দেবীবর কর্তৃক এদেশীয় কুলীনদিগের মেল বদ্ধ হইলে পরতাঁহারা যে যে স্থানে বসতি করেন, সেই সেই স্থানের নামানুসারে বিখ্যাত হন। যথা:—ফুলিয়ার মুখুটি, খনিয়ার চাটুতি, সাগরদহের বন্দ্য, কলিকাতার ঘোষাল—ইত্যাদি। ঘোষালবংশীয় পশো হইতে কলিকাতার ঘোষাল নাম হয়। যথা করিকা-

এই পশো অন্ন... বৎসর গত হইল বর্তমান ছিলেন। সুতরাং ইহাতেও কলিকাতার প্রাচীনত্বের প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে।

কলিকাতা নামে ব্যুৎপত্তিবিষয়ে বহুতর কল্পনা কল্পিত হইয়াছে। কোন মহাশয় লিখিয়াছেন যে, অনেকনগরের নাম দেবমণ্ডপাদির আখ্যা অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকে; অতএব বোধ হয় কলিকাতার অদূরবর্তী পীঠস্থান কালীঘাটের নামানুসারে ইহার নামকরণ হইয়া থাকিবে। অর্থাৎ কলিকাতার নাম, কালীঘাট অথবা কালীঘাটার অপভ্রংশমাত্র। অন্য এক মহাশয় লেখেন, ইং ১৭৪২ অব্দে মহারাষ্ট্রীয় উৎপাত নিবারণার্থ যে পরিখা খনিত হয়, সেই ‘খাল কাটা’হইতে কলিকাতা’নাম উৎপন্ন হইয়া থাকিবে, যেহেতু উক্ত অব্দের অনেক পূর্ব্বে কলিকাতা নাম প্রচলিত ছিল না। এই উভয় ব্যুৎপত্তি যে বিলক্ষণ অমূলক তাহা উপরিভাগে পদ্য ও কারিকায় সপ্রমাণ করিতেছে, কারণইং ১৭৪২ অব্দের অনেক পূর্ব্বেকলিকাতা নাম প্রচলিত ছিল।

১৩