পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
দ্বিতীয় অধ্যায়

 ইহার পর ইষ্ট-ইণ্ডিয়া কোম্পানী দেখিলেন বিলাত হইতে অপরাপর অনেক ব্যবসায়ী আসিয়া বাণিজ্য করাতে তাহাদিগের লভ্যের ব্যাঘাত হইতে লাগিল।অতএব কোর্ট অব ডাইরেক্টর সভার আজ্ঞানুসারে, উক্ত প্রতিযোগীদিগের আগমন নিবারণ নিমিত্ত গঙ্গাসাগরের নিকট এক দুর্গনিৰ্মাণার্থনবাবেরস্থানে অনুমতি প্রার্থনা করিয়া পাঠাইলে তিনি তাহা অগ্রাহ্য করিলেন। ইহা ব্যতীত এই সময়ে বেহার প্রদেশে রাজদ্রোহ উপস্থিত হওয়ায় পাটনাস্থইংলণ্ডীয় বাণিজ্যকুটির সাহেবের উপর সন্দেহ হইলে নবাব ইংরাজদিগের প্রতি বিরক্ত হইয়া এই নিয়ম করিলেন যে, তাঁহাদিগের বাণিজ্য সম্পত্তিমাত্রের মূল্য অনুসারেশতকরা ৩০ টাকা কর দিতে হইবে। পূর্ব্বে সম্রাটের আজ্ঞানুসারে তাঁহারা বার্ষিক তিন সহস্র টাকামাত্র দিয়া নিস্তার পাইতেন। ইংরাজদিগের প্রতি নবাবের বিরুদ্ধ ভাব জানিতে পারিয়া তদধীন রাজকর্মচারীরা তাহাদিগের প্রতি অত্যন্ত অত্যাচার আরম্ভ করিতে লাগিল। নবাবের লিখনানুসারে সম্রাট অত্যন্ত ক্রোধাপন্ন হইয়াইংরাজদিগের প্রতিউত্তেজনাকরণেঅনুমতি দেওয়ায় তাঁহারা মহাবিপদগ্রস্ত হইলেন। এই সকল সমাচার ইংলণ্ডাধীপের শ্রবণগোচর হইলে তিনি কোম্পানীর আনুকূল্যে নিকলসন নামক জনৈক পোতপতিরঅধীনে ৬শত সেনাপূর্ণদশখানা রণপোত প্রেরণ করিলেন। ঐ সকল তরণী বাতাতিপাতে সমুদ্রের দলভঙ্গ হইয়া পড়ে; কয়েকখানামাত্র ভাগীরথী মধ্যে প্রবিষ্ট হয়। ইহা ব্যতীত মাদ্রাজের বড় সাহেব হুগলীস্থকুটির সাহায্যের জন্য ৪ শত পদাতিক সৈন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন। সায়েস্তা খাঁ জলপথে এবং স্থলপথে এই সকল সমরায়োজন দেখিয়া সঙ্কুচিত চিত্তে ইংরাজদিগের সহিত সন্ধিকরণের প্রস্তাব করিলেন। কিন্তু দৈবাধীন একটা সামান্য কলহোপলক্ষেতদনন্তর আকুণ্ড কুণ্ড উপস্থিত হইল।

১৯