পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়

দ্বারা তাঁহাকে লিখিয়া পাঠান যে নবাবের পারিষদবর্গ বিশেষতঃ হিন্দু সম্রান্ত লোকমাত্রেইতাহার প্রতিবিরুদ্ধ ভাব প্রকাশ করিতেছেন এবং সকলের এমন ইচ্ছা যে, ইংরাজদিগের সহায়তা করেন। কিন্তু পত্রবাহক ড্রেক সাহেবকে কহিল এই পত্র কোন মুসলমান দ্বারা পঠিত না হইয়া হিন্দুদ্বারা পাঠ করাইবার আদেশ আছে। ইহা শুনিয়া ড্রেকসাহেব জনৈক পারশ্যবিদ্যাবিৎ হিন্দুর অন্বেষণে চারিদিকে লোক পাঠাইলেন। দৈবাধীন সেই দিবস নবকৃষ্ণ ব্যবহর্ত্তা স্বকীয় কার্য্যোপলক্ষে বড়বাজারে গিয়াছিলেন। ড্রেক সাহেবের লোকেরা জনরবে তাঁহার পারশ্য ভাষার ব্যুৎপত্তি বাহুল্যের কথা অবগত হইয়া তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া সাহেবের নিকট উপস্থিত করিল। নবকৃষ্ণ ঐ পত্রপাঠপূর্ব্বক ইংরাজীতে তাহার মর্ম্ম অবগত করিলে পর সাহেব তাহার দ্বারা পত্রের উত্তর লিখিয়া পাঠাইলেন। সেই সময় তাঁহার বয়স ১৬ বৎসরের অধিক হয় নাই। তাহার কার্য্যে সন্তুষ্ট ড্রেক সাহেব ২০০ টাকা বেতনে নবকৃষ্ণকে কোম্পানীর মুন্সিপদে নিযুক্ত করেন। ঐপদে তৎপূর্ব্বে তাজুদ্দিন নামক একজন মুসলমান নিযুক্ত ছিলেন। সেই হইতে নবকৃষ্ণ মুন্সি নামে বিখ্যাত হন। ড্রেক সাহেব সেই সময়ের নীতি অনুসারে তাঁহাকে সওয়ারী খরচ প্রদান করিতেন। এই মুন্সিগিরি কার্য্যে তিনি এরূপ পারদর্শিতা প্রকাশ করেন যে তারপর ক্লাইভ সাহেব তাহাতে সাতিশয় পরিতুষ্ট হইয়া রাজকীয় গুরুতর কার্য্যমাত্রে তাহাকে নিযুক্ত করিতেন। সিরাজউদ্দৌলা দ্বিতীয়বার কলিকাতা আক্রমণে আসিলে তাহার সহিত সন্ধি নিবন্ধন ছলে নবকৃষ্ণকে উপঢৌকনসহ তাহার শিবিরে প্রেরণ করিলে তিনি নবাবী সৈন্যের প্রকৃত অবস্থা দর্শনপূর্বক স্বীয় প্রভুসমীপে বিজ্ঞাপন করেন। অধিকন্তু মীরজাফরের সহিত ক্লাইভের গোপনীয় অভিসন্ধি

৭৫