পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলিকাতা কল্পলতা

রাজা নবকৃষ্ণ সাহেবকে বলিলেন—“আমার সঙ্গে এত রৌপ্যমুদ্রা আছে যে সেগুলি বহুক্ষণ পর্য্যন্ত গুলির কার্য্য করিতে পারে।” মেজর সাহেব নবকৃষ্ণের অভিমতে উক্ত মুদ্রারাশি বর্ষণপূর্বক সেদিন যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছিলেন।

 গোবিন্দপুরের দুর্গ নির্মাণকালে মৃত্তিকা খনন করিতে বেদনাগর অক্ষরাঙ্কিত একখণ্ড তাম্রপত্র প্রকাশ পাইলে হেষ্টিংশ সাহেব রাজা নবকৃষ্ণকে তাহার অর্থ উদ্ধার করিবার ভার অর্পণ করিলেন। রাজার অনুমত্যনুসারে জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন তাহার অর্থজ্ঞাপন করিলে জানা গেল, তাহা রাজা রামচন্দ্রের কৃত এক খণ্ড দানপত্র। রাজা জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননকে গভর্ণর জেনারেলের নিকট লইয়া যাইতে উদ্যত হইলে ভট্টাচার্য স্নেচ্ছের দান গ্রহণ আশঙ্কায় তাহাতে বিরত হইলেন। বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কারকে কহিলে তিনিও উক্ত আপত্তি করিলেন। পরিশেষে রাধাকান্ত তর্কবাগীশ নামক জনৈক পণ্ডিত সম্মত হইয়া মহারাজার সহিত হেষ্টিংশ সাহেবের নিকট উপস্থিত হইয়া অর্থ করিয়া দিলে সাহেব তাহাকে কলিকাতার পার্শ্ববর্তী এক সহস্র বিঘা ভূমি পুরস্কার করিলেন।

 এইসময়ে মহারাজ নবকৃষ্ণের খ্যাতি প্রতিপত্তির কথা কি উল্লেখ করা যাইবে। পার্লামেণ্ট মহাসভায় হেষ্টিংশ সাহেবের পরীক্ষাকালে লর্ড থর্লো‌ সাহেব তাহার বিষয়ে এইরূপ উক্তি করেন-“নবকৃষ্ণ হেষ্টিংশ সাহেবের পারস্য শিক্ষক ছিলেন। সেসময়ে তাঁহারা উভয়েই যৌবনপ্রাপ্ত। নবকৃষ্ণের এক্ষণে যে অত্যুচ্চপদ, সম্মান ও অতুল ঐশ্বর্য্য প্রভৃতি হইয়াছে, তাহা হেষ্টিংশের সহিত তাঁহার সংযোগের উপরই নির্ভর করিয়াছে; যেহেতু তদ্দ্বা‌রাই তিনি লর্ড ক্লাইভের নিকট পরিচিত হন ফলে ক্লাইভের শাসনকাল পর্যন্ত মহম্মদ রেজা খাঁ

৮৪