পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়

ব্যতীত নবকৃষ্ণের তুল্য রাজকীয় পরাক্রম ও লাভসূচক পদধারণ বিষয়ে আর কেহইতাহার তুল্য ছিল না।”

 এইরূপে মহারাজা নবকৃষ্ণ অতুলিত খ্যাতি প্রতিপত্তি, ধন সম্পত্তি ও সুখ সম্ভোগান্তর স্থাবর-অস্থাবর বিপুল বিষয় স্বীয় উত্তরাধিকারীগণের প্রতি পরিত্যাগপূর্ব্বক ইংরাজী ১৭৯৭ অব্দের ২২শে নভেম্বর তারিখে মানবলীলা সম্বরণ করিলেন।

 মহারাজা নবকৃষ্ণ স্বীয় পুত্ররত্নে চরিতার্থ না হওয়ায় নৈরাশ্যবশতঃ হিন্দুদায় মতে স্বীয় অগ্রজ রামসুন্দর ব্যবহর্ত্তার পুত্র গোপীমোহনকে পোষ্যপুত্রত্বে গ্রহণ করেন কিন্তু পুত্র প্রতিগ্রহের পর তাহার এক ঔরসপুত্র জন্মগ্রহণ করিলেন—তাঁহারই নাম রাজা রাজকৃষ্ণ। রাজা নবকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিষয় বিভাগ লইয়া উভয় ভ্রাতার দ্বন্দ্ব উপস্থিত হইলে সুপ্রীম কোর্টের বিচারে তাহার নিষ্পত্তি হয়—তদনুসারে উভয় ভ্রাতা তুল্যাংশ প্রাপ্ত হন।

 গোপীমোহন দেব কৌন্সিলের মেম্বর স্টবস্‌সাহেবের প্রথমতঃ দেওয়ান ছিলেন তৎপরে প্রধান সেনাপতিস্যর জেমস্ রিবেট কার্ণক সাহেবের দেওয়ানী করিয়া পরিশেষে গভর্ণর জেনারেল স্যর জন্ ম্যাক্‌ফারসন্‌ সাহেবের দেওয়ান পদ ধারণ করেন। তিনি স্বীয় কর্ত্তব্য সুচারুরূপে নির্বাহকরিয়া প্রভুদিগের প্রিয় হইয়াছিলেন।উক্তমহাশয় পারশ্যবিদ্যায় ব্যুৎপন্ন ছিলেন এবং সংস্কৃত ন্যায়দি দার্শনিক শাস্ত্রে এরূপ কুশাস্ত্র প্রমিত সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধি ধরিতেন যে সে সময়ের প্রধান প্রধান নৈয়ায়িকগণ যে সকল কঠিন কূট উপস্থিত করিতেন তিনি অনায়াসে সে সকলের মীমাংসা করিয়া দিতেন। ইউরোপীয় ভূগোল ও খগোল বিদ্যার প্রতি তাঁহার বিশেষ অনুরাগ ছিল। ঐ দুইটি শাস্ত্রে তাঁহার কিরূপ পারদর্শিতা ছিল তাহাইহাতেই প্রকাশ পাইতেছে যে তিনি স্বীয় অধীনস্থ কারিকরদিগের দ্বারা ভূমণ্ডল নক্ষত্রমণ্ডলের

৮৫