পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যোগতত্ত্ব । >boʻ> মলিন ও বিবর্ণ হয় এবং হৃৎস্পন্দন মৃদু ও বেগবান হইয় পড়ে। ডাক্তার হিউসন কহেন যে, এই প্রক্রিয়ায় কোন বিপদের আশঙ্কা নাই। কি প্রকারে এইরূপ ক্রিয়ার দ্বারা মনুষ্য অজ্ঞান হয়, তদ্বিস্বয়ে অনেক বক্তব্য আছে। কিন্তু স্থল স্থল এই কয়েকট কারণ নির্দেশ করিলে বোধ করি পাঠকের কুতূহল কিয়ং পরিমাণে নিৰ্ব্বপিত হইবে। প্রথমতঃ একটা কারণ এই—উপর্যুপরি ঘন ঘন শ্বাস গ্রহণ করিলে রক্তে অন্নজানের স্বল্পত হয় এবং তাহার ফলভূত ক্ষারজানের আধিক্য হইয়া ক্ষণিক স্নায়ু মণ্ডলকে বিষাক্ত করে। এই মতটী ডাক্তার হিউসনের অনুমোদিত। ডাক্তর বন উইল কহেন যে, ক্ষার জানের আধিক্য এই চৈতন্যলোপের একটা অন্যতম কারণ, তাহতে সন্দেহ নাই । কিন্তু ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস নিৰ্ব্বাহ হওয়ায় মস্তিষ্কের কৈশিক নাড়ী সমূহ রুধির স্রোতে উপপ্ল ত হইয় উঠে। বোধ করি এই কারণ অধিক যুক্তিযুক্ত। আবার দেহের ঐচ্ছিক পেশীর প্রতি মন যেরূপ নিবিড় ভাবে সন্নিবিষ্ট হইয়া শ্বাসক্রিয়া সম্পন্ন করিতে থাকে, তাহাতে চিত্তসংযোগও যে ইহার আর একটী কারণ নয় এমন বলা যায় না । উপরি লিখিত চৈতন্য হরণের অভিনব উপায়ট চিকিৎসাশাস্ত্রের বৃহৎ ক্ষেত্রে একটী মহোপকারক উন্নতি সাধক হইয়াছে কি না, তদ্বিষয়ে আমাদের কোন কথ। বলিবার প্রয়োজন নাই । কিন্তু নিদিষ্ট সময় মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাস সংখ্যার ইতর বিশেষ ঘটলে মতুয্য-দেহের যে কিরূপ অবস্থান্তর হয়, তাহা দেখাইবার জন্য আমাদের যত্ন । শ্বাস রোধের সহায়তায় বাজিকরের আর একটা অদ্ভুত কাৰ্য্য দেখাইয়া দর্শকদিগের চিত্তরঞ্জন করে। একখানি দীর্ঘ বস্ত্রের চরি কোণ চারি জন লোকে ধরিয়া থাকে, পরিশেষে শ্বাসরোধ করিয়া দ্রুত লঘুপদে বাজিকরেরা তাঙ্গার উপর নিয়া দৌড়িয়া যায়। তাহাতে বস্ত্রের উপর কিছুমাত্র ভর বোধ হয় না। অনেক সাধক জলের উপর খড়ম পায় দিয়া গমনাগমন করিতে পারেন, কখন কখন এইরূপ গল্প শুনিতে পাওয়া যায়। কিন্তু বিবেচনা হইতেছে, ইহা নিতান্ত গল্প না হইবে । যে কৌশলে বস্ত্রের উপর দোঁড়িতে পারা যায়, সেই কৌশলে যে জলের উপরও চলিতে পারা যাইবে না, তাহার অসম্ভাবনা কি ? উপরের লিখিত বিবরণ গুলি দ্বারা আমরা এই জানিতে পারিলাম যে, অভ্যাস করিলে স্বাভাবিক অবস্থা অপেক্ষা অধিককাল পর্যন্ত শ্বাস বন্ধ করিয়া থাকা যায় । অত্যধিক কাল শ্বাস বন্ধ করিয়৷ থাকিলে আর চৈতন্য থাকে না ।