পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| কল্পদ্রুম وان سbلا যোগ ভাঙ্গিয়াছে বা কৈ ? বাহিরে ত কেবল প্রেমাশ্র বর্ষণ হইতেছে, অঙ্গের বিভূতি সব ধৌত হইয়া পড়িতেছে। সামান্য প্রেমিকের কেবল চক্ষু দর দর ধারায় ভাসিয়া যায়,–কিন্তু এ ত সামান্য প্রেমিক নয়, এক নয়ন কাদিয়া কি করিবে ?—অম্বিক ও উমাপতির প্রেমরসে গিরিবরের সর্বাঙ্গ ওতপ্রোতরূপে উৎপুত হইতেছে। তবু স্তম্ভিত,—তবু ধ্যানে নিমগ্ন, অস্তরে প্রেমের উৎস একেবারে তরঙ্গান্দোলিত হইয়া যাইতেছে, চিত্ত সে বেগ ধারণ করিতে পারিতেছে না, বাহিরেও উচ্ছলিত হইয়া প্রবাহিত হইতেছে । যেমন দ্রবময়ী গঙ্গা ব্ৰহ্মার কমণ্ডলু হইতে নিঃস্থত হইয়া ভূমণ্ডলে আগমন করিলে মহাদেব সানন্দে আপনার সুবিস্তীর্ণ পিঙ্গল জটাজালে তাহার বেগ ধারণ করিয়াছিলেন ; আজি এখানে আবার মানস সরোবরের কৌতুক দেখ ! কৈলাসের রসার্দ্র কলেবর হইতে কুল কুল রবে জলরাশি বিনিঃস্বত হইতেছে ; ফুরিত অন্তরে মানস-হৃদয় খুলিয়া দিয়াছে, জলপ্রপাত ফুলিয়া উঠিয়া আছাড়িয়া আছাড়িয়া মানস সরোবরে মিশ্রিত হইতেছে । আজ সরসীর কি বিচিত্র শোভা ! তুষাররাশি গলিয়। গিয়াছে,—সংবীজ্যমান মধুর মারুত হিরোটনিৰ্ম্মল জল ঢল ঢল করিতেছে। হিমানীর আর প্রভাব নাই। কুলৰীতরুরাজি নবীন পল্লবে সুন্দর শোভা ধারণ করিতেছে, বায়ুভরে কখন তর তর করিতেছে, কথন ঝর ঝর করিতেছে ; কখন আবার হেলিয়া ছলিয়া হাসিয়া হাসিয় প্রসারিত করে আলিঙ্গন করিয়া অমেদে লুটিয়া পড়িয়া সরোবরের স্বচ্ছ সলিলে মুখ দেখিতেছে। এটা অপূৰ্ব্ব নিশীথ সময়। স্থানটাও অপূৰ্ব্ব । তরুদের দেখিয়া দেবকন্যা তারাগুলি সারি সরি আসিয়া মুখ দেখিতেছে, কিন্তু স্পষ্টরূপে চাহিতেছে না,–পাছে প্রাণনাথের মুঙ্গের কলঙ্ক দেখা যায়। জলচর পার্থী সব কলরব করিয়া আনন্দে জলে’কেণী করিড়েছে,—জলে ঢেউ হইতেছে, জল টল টল করিয়া কঁাপিয়া উঠিতেছে ; একখানি চাদ যেন সহস্ৰখানি হইয়া ছুটয়া ছুটিঃ এ তারাটর ও তারাটীর পাছু পাছু ধাবিত হইতেছে। তারাগণও যেন লজ্জায় পলাইতেছে—প্ৰাণেশ্বরকে ধরা দিতেছে না। মানস ত সরোবর নয়,—এ আনন্দরসের রঙ্গভূমি,--এটা জগৎ ছবির মুখ দেখিবার আরসি। মানসেই মুখসচ্ছন্দতা, মানসেই রূপলাবণ্য। শৌর্য্য, বীৰ্য্য, দয়াদাক্ষিণ্য সকলই মানসে ! কাজে যাহা না হয়, মানসে তাহ অনায়াসে হুইয়া থাকে ; মানসেই সব, মানসে যাহা নাই তাহ আর কোথাও নাই। মানস অভূতপূর্ব