পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミQb- কল্পদ্রুম | হইতেছে। সুতরাং ক্ষয় অধিক হইল না ; অতএব ভোজ্য দ্রব্যও যৎসামান্ত হইলে পর্যাপ্ত হয়। ক্রমে দেহ আবার এত ক্রিয়াবিহীন হইয়া আইসে যে, তখন কিছু কাল কোন দ্রব্য আহার না করিলেও কোন অপকার হয় না। এই জন্য যোগী অনাহারে কিছুকাল জীবিত থাকিতে পারেন । পাঠক ! এখন সহজে বুঝিতে পারিবেন, শ্বাসরোপ করিলেও সহসা কেন প্রাণীর প্রাণ বিয়োগ হয় না। শ্বাসক্রিয়া দ্বারা দেহের কি উপকার সাধিত হয় ?—শ্বাসক্রিয়া দেহের মার্জনী, রক্তের যত মলিনতা, যত বিকৃত পদার্থ ইহার দ্বার দূরীভূত হয়, অর্থাৎ পূৰ্ব্বেই কথিত হইয়াছে, শ্রমাদির দ্বারা দেহের বিধান-উপাদান ধ্বংস হইতে থাকে। সেই সকল ধ্বস্ত পদার্থ মল,মূত্র, ঘৰ্ম্ম ও শ্বাসক্রিয়া দ্বারা দেহ হইতে দূরীকৃত করা হয়। এখন দেখা যাইতেছে শ্রমের স্বল্পতা এবং আহারের স্বল্পত হওয়ায় দৈহিক ক্ষয়েরও স্বল্পত হইয় পড়ে। কাজে কাজে দেহমধ্যে অধিক বিকৃত পদার্থ উৎপন্ন হইতে পারে না । সকল কাজেই এইরূপ বিধি আছে যে, প্রয়োজনানুরূপ দ্রব্যের মূল্য হইয়া থাকে। যেখানে কোন দ্রব্যের অধিক প্রয়োজন, সেখানে তাহার মুল্য ও অধিক । যেখানে সে দ্রব্যের অল্প প্রয়োজন, সেখানে তাহার মূল্য ও নিতান্ত অল্প ; আবার যেখানে তাহার প্রয়োজন নাই, সেখানে তাহার কিছুই মূল্য নাই। নানাপ্রকার কৌশল দ্বারা যদি দেহমধ্যে অল্প বিকৃত পদার্থ সঞ্চিত হইতে থাকে, তবে তাহ পরিষ্কার করিবার জন্য সামান্য মাত্র উপায় থাকিলেই যথেষ্ট হইল। অতএব সেখানে শ্বাসক্রিয়ার প্রয়োজন অধিক নাই । জননীর জরায়ু মধ্যে যখন শিশু বাস করে, তখন তাহার শ্বাসক্রিয়া থাকে না। ফুসফুস যকৃতের ন্যায় নিরেট,—ঘৰ্ম্ম নাই, মল মূত্রও নাই। শরীর পোষণ, শোণিত সংস্করণ প্রভৃতি ক্রিয় প্রস্থতিকর্তৃক সম্পাদিত হয় । যাহাকে আমরা ফুল বলি ( Placenta ) তৎকর্তৃক গর্ভধারিণীর নিৰ্ম্মল রক্ত শিশুশরীরে আনীত হয় এবং তাহাই জরায়ুস্থিত মুকুমার সন্তানকে পোষণ করে। ঐ ফুল এবং শিশুর যকৃৎ তাহার জীবন লাভের প্রধান সহায় । যকৃৎ মধ্যে পরিষ্কৃত শোণিত নীত হইয়া দেহে সঞ্চালিত হইতে থাকে । সন্তানের দেহে যে সকল বিকৃত পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাহা ঐ ফুল দ্বারা গর্ভধারিণীর দেহে প্রবেশ করে। 's