পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মর্ত্যে আগমন । 8 o & দুর্গটা হিন্দুরাজাদিগেরই ছিল । মুসলমানদিগের হইলে প্রাচীরে এসব মূৰ্ত্তি থাকিবে কেন ? বরুণ। এমন হইতে পারে দেবদ্বেষী মুসলমানের হিন্দু দেব-মন্দিরগুলি ভাঙ্গিয়া আনিয়া সেই প্রচীরে এই প্রাচীর নিৰ্ম্মাণ করিয়াছে। এই দুর্গট দীৰ্ঘে চারি হাজার ফিট এবং প্রন্থে তিন হাজার পাঁচ শত ফিট আন্দাজ হইবে। ইহার প্রচীর ১৩ । ১৪ হাত উচ্চ। কেল্লাটার তিন দিকে গড় এবং এক দিকে ভাগীরথী স্বয়ং প্রবাহিত। এক্ষণে ইহার চারিদিগের প্রচীর এবং চারিট গেট মাত্র অবশিষ্ট আছে। ঐ গেটগুলিকে লালদরজা কহে। আহা ! এই কেল্লায় দুরন্ত নবাব মীর কাসিম রাজা রাজবল্লভকে যেরূপে হত্যা করিয়াছিলেন, অদ্যাপি স্মরণ হইলে কান্না আইসে । ইন্দ্র । নবাব, রাজা রাজবল্লভকে কি কারণে হত্যা করেন ? বরুণ । যখন নবাব দেখিলেন তিনি নামে মাত্র নবাৰ, তাহার হাতে, কোন ক্ষমতাই নাই, ইংরাজেরাই সৰ্ব্বময় কর্তা তখন তাহার স্বাধীন হইবার ইচ্ছা হইল এবং মুরশিদাবাদ পরিত্যাগ করিয়া মুঙ্গেরে আসিয়া বাস করিতে লাগিলেন। তিনি মনে মনে স্থির করিলেন রাজা রাজবল্লভ, মুরশিদাবাদের শেঠেরা এবং আর কতকগুলি লোক ইংরাজদিগের নিতান্ত অনুগত এবং বোধ হয় তাহদেরই ষড়যন্ত্রে ক্রমান্বয়ে নুতন নূতন নবাব পদচ্যুত হইতেছে। অতএব ঐ কয়েকটা কণ্টককে অগ্ৰে বধ করিয়া নিষ্কণ্টক হওয়া উচিত। তিনি এইরূপ স্থির করিয়া রাজ রাজবল্লভকে এখানে বন্দী করিয়া আনেন এবং কারারুদ্ধ করিয়া রাখেন । পরিশেষে প্রাণদণ্ডের আজ্ঞা দিয়া কহেন “ বল দেখি তোমার কিরূপ মরণে ইচ্ছা হয় ?” রাজা তৎশ্রবণে কহেন * আমাকে যেন জাতুবী-জলে নিমগ্ন করিয়া মারা হয়।” মীর কাসিম এ কথায় সম্মত হইয় তাহার বক্ষে প্রচণ্ড শিলা বাধিয়া জলে নিক্ষেপ করিতে হুকুম দেন। নিক্ষেপ সময়ে রাজা “ হা ! রাম ” শব্দে যে চীৎকার করিয়াছিলেন– সেই শব্দ যেন এক্ষণেও আমার কর্ণে ঘুরে বেড়াচ্চে। ব্ৰহ্মা। বরুণ, এস্থলের নাম মুঙ্গের হইল কেন ? বরুণ। কিম্বদন্তী, এই স্থানের নাম পূৰ্ব্বে মুদগলপুর ছিল । মুদগল নামক কোন ঋষি এই স্থানে বসিয়া তপস্যা করিতেন বলিয়া ঐ নাম श्रेग्राट्छ् । দেবতার কেল্লার মধ্যস্থ একটী কবরের সন্নিকটে বাসা ভাড়া করিলেন ।