পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 R. কল্পদ্রুম | পশ্চিমাংশে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ছিল। ইহার আয়তন বড় অধিক ছিল না। দীৰ্ঘে অনধিক ৬০ ক্রোশ এবং প্রস্থে ১০ ক্রোশ মাত্র ; কিন্তু এই ক্ষুদ্রায়তনবিশিষ্ট স্থানের অধিবাসীরা সামুদ্রিক বাণিজ্য বিষয়ে এমন প্রতিপত্তি লাভ করিয়া গিয়াছেন, যে তাহ শুনিলে বিস্মিত হইতে হয়। পৃথিবীর তৎকাল-পরিচিত এমন নগরী ছিল না, যেখানে ফিনিসিয়ান বণিকগণ বাণিজ্যাৰ্থ গমন করেন নাই। সকল প্রাচীন নগরীর পাদ-দেশ-প্রবাহিত অনন্ত সাগরেপকূলে বন্দরে বন্দরে তাহাদের বাণিজ্যপোতের ধ্বজাসমূহ উড ডীয়মান হইত। যাহার ইতিহাস পাঠে কিঞ্চিৎ অনুরক্তি আছে, যিনি ইতিহাস পাঠে বিভিন্ন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিভিন্ন নরপতিগণের অভু্যদয়, পতন, রাজ্যশাসন ইত্যাদি অবগত হইতে ইচ্ছুক এবং ইতিহাসকেই জ্ঞানলাভের দ্বারস্বরূপ বলিয়া বিবেচনা করেন ; তিনি নিশ্চয়ই উহাদের প্রগাঢ় বাণিজ্য-প্রিয়তার বিষয়, এবং প্রাচীন টুয়ের নগরীর (৫) অতুল ঐশ্বৰ্য্যের বিষয় অরগত আছেন। ফিনিসীয়ানের অনেক দেবতার আরাধনা করিতেন। তন্মধ্যে “ মিলিকটস • জলদেবতা, অত্যন্ত প্রধান ছিলেন। সমুদ্র মধ্যে জাহাজ আটকাইলে তাহারা ইহার ষোড়শোপচারে পুজা দিতেন ; এমন কি নরবলি পৰ্য্যন্ত দিতেও কুষ্ঠিত হইতেন না ! বাণিজ্যই ইহণদের জাতীয় ব্যবসায় ছিল । স্ত্রীলোকের পর্য্যন্ত জাহাজ নিৰ্ম্মাণ করিত। বাণিজ্যাৰ্থ ইহারা ভারতেও আগমন করিতেন । কথিত আছে, একদল ফিনিসিয়ান বণিক বাণিজ্যfর্থ যৎকালে ভারতবর্ষে আগমন করিতেছিলেন, তখন এক দিন সমুদ্রমধ্যে প্রবল ঝটিকাক্রান্ত হইয়া তাহারা আরবের উপকুলবর্তী কোন এক চরে জাহাজ নঙ্গর করিতে বাধ্য হন ; এবং সেখানে কালয় নামক এক প্রকার বৃক্ষের শাখা ভঙ্গ করিয়া তদ্বারা বালুকার উপরে রন্ধন করিয়া, আহার করেন। আহারাস্তে দেখিতে পান, বালুক জমিয়া কাচ হইয়া গিয়াছে। এইরূপেই তাহারা প্রথম কাচ নিৰ্ম্মাণ করিবার উপায়ের আবিষ্কার করেন। যাহা হউক, ভারত যে র্তাহাদের বাণিজ্যস্থল ছিল, ছিরোদোতাসের গ্রন্থে তাহ অবগত হওয়া যায়। নুনাধিক ২৮০০ শত বৎসর পূৰ্ব্বে সলমন ও হিরাণ রাজার অমুমতানুসারে ফিনিসিয় বণিকেরা ভারতের পশ্চিম প্রান্তস্থ গুজরাট প্রভৃতি স্থান হইতে স্বর্ণ, রৌপ্য, দারচিনি, এলাইচ, (৫) টায়র ফিনিসীয়ার প্রধান নগর। ইহা জেরুঞ্জেলেমের ৪• ক্রোশ উত্তরে ছিল।