পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"8☾ © কল্পদ্রতম । কও ” -বলে। আমরাও বাঙ্গালা কথা কই ; ফল গৃৎসবে চক্ষুতে আবীর দিলে,—“ চোক্ গেল ”—বলি ; পরিষ্কার জল দেখিলে,—“ ফটক জল ”— বলি ; আবার ঘরের গৃহলক্ষ্মী মনের মত অলঙ্কার না পাইলে যখন মানভরে ভারী হন, তখন আমরা ঘোম টাটা খুলিয়া বলি—“ বউ কথা কও ”। তবে কি পাখীর বুলির সঙ্গে আমাদের ভাষার সাদৃশ্য নাই ? অবশ্যই আছে! অতএব কতকগুলি ভিন্ন জাতির ভাষার কতকগুলি শব্দের সোসাদৃশ্য দেখিয়া যদি এরূপ সিদ্ধান্ত করা যায় যে,এককালে উহারা সকলেই এক ভাষী ও একজাতি-নিবিষ্ট না থাকিলে কোন ক্রমেই সেরূপ ঘটতে পারে না, তবে পার্থীর সঙ্গে আমাদের কুটুম্বিতা কেন না হইবে ? কারণ পাখির বুলির সঙ্গের আমাদের অনেক বাক্যের বিলক্ষণ সোসাদৃশ্য আছে। ইউরোপে বিদ্যার বড় আদর। সেখানে আজ কাল প্রাচীন ভাষার সবিশেষ অনুশীলন চলিতেছে। পণ্ডিতেরা অনেক দেখিয়া, অনেক শুনিয়া অবশেষে একটা কল্পতরুর ছায়ায় আশ্রয় পাইয়াছেন–র্তাহারা সংস্কৃত শাস্ত্রের শাখা অবলম্বন করিয়াছেন। এই দেবমাতৃক ভাষার শব্দগুলি সৰ্ব্বফলপ্রদ। ংস্কৃত ব্যাকরণে বিশিষ্টরূপ বুৎপত্তি জন্মিলে প্রায় সকল ভাষার শব্দগুলি অনায়াসে সাধিতে পারা যায়। সংস্কৃত শব্দের মত কোন ভাযার শব্দ এত কোমল নমনীয় ও স্থিতিস্থাপক নহে। উহাকে সংকুচিত কর, সম্প্রসারিত কর, ফিরাও, ঘুরাও, কিছুতেই উহা ভাঙ্গিবে না,—মচ কাইবে না। অতএব অন্য ভাষার শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত শব্দের যে সোসাদৃশ্য হইবে, তাহ বিচিত্র নয়। শাদিকেরা এখন এই প্রতিপাদন করিতেছেন যে, যে যে জাতির ভাষার কতকগুলি শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত শব্দের সোসাদৃশ্য আছে, মূলে তাহার এক অভিন্নজাতি ছিল। কাজেই আমরা দেখিতেছি—“ গুণ হয়ে দোষ হইল বিদ্যার বিদ্যায়”–সংস্কৃত শব্দের কোমলতাই পবিত্র আর্যজাতিকে স্লেচ্ছ জাতির সঙ্গে মিশ্রিত করিয়া দিতেছে। নরম দেখিলেই সকলে তাহাকে চাপিয়া ধরে । ভারতের ত সব গিয়াছে, এখন জাতি ও ভাষা টুকুও থাকা দায়—তাহাতেও অনেকে আসিয়া ভাগ বসাইতেছেন। ংস্কৃত শাস্ত্র সুশোভিত শব্দ–নিকুঞ্জবনের “ বউ কথা কও ” পাখীর বুলি। এই নিকুঞ্জবন কোথাও বাক পল্লবে আলো করিয়া আছে, কোথাও ভাবরসময় কুসুমমঞ্জরীর গন্ধামোদে দশ দিক পরিপূর্ণ করিতেছে ;–আবার শাখার মধ্যে ব্যাকরণস্বত্র-পার্থীর রব,—মনে যা ভাবিবে, সেই সূত্র তোমাকে