পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভtষার নমনীয়ত । 8 © Ꮌ ভাই শুনাইবে। যমুনা পুলিনের কদম্ব ড’লে বসিয়া রাখাল-রাজ বাণীটা বাজাইতেন, ব্রজের রাখালে শুনিত বাঁশী বলিতেছে—“ আয় ভাই, গোঠে যাই, শ্যামলী ধবলী ডাকিছে অই ৷ ” রাই গৃহকৰ্ম্ম করিতেছেন—মন যমুনা তটে। বট পাতিয়া বেসাতি কুটিতেছেন, আন মনে আঙল কাটিয়া ফেলেছেন,—ক্রক্ষেপ নাই, কাণ তুলিয়া কেবল এক মনে একধ্যানে ভাবিতেছেন-বাশী কি বলিতেছে ; রাই শুনিতেছেন—“ তোমার হয়ে আর কোথায় বা যাব রাই, বল প্রিয়ে আমি কার কাছে দাড়াই, হারাই বলে আমি সদাই বলি রাই, ধবলী চরাই, বেড়াই তোমার গুণ গেয়ে বৃন্দাবন ধাম । ” প্রাণের ছেলে বাথানে, যত বেলা হইতেছে, যশোদারাণীর হৃদয় ফাটিতেছে ; তিনি শুনিতেছেন—“ আমায় দে মা জননি! ক্ষীর সর ননী, গোঠে গোঠে ফিরি, ক্ষুধায় সারা হই । যার যেমন প্রবৃত্তি, তিনি সেইরূপ শুনিতেছেন, তিনি সেইরূপ আপনার ভাবে আপনি মগ্ন হইতেছেন । বৰ্ণশী কিন্তু আপন সুরে ভোর । - সংস্কৃত শব্দ যাহা বলে, সে আপনার বুলিই বলিতেছে। তবে তুমি যদি তাহা হইতে নুতন কিছু বাহির করিতে পার, সেট সংস্কৃতের নমনীয়তা ; আর তোমাকে অধিক কি বলিব ?—তোমার সেটা অসামান্য গুণপনা । কৃষ্ণানন্দ বিদ্যাবাচস্পতি নিখিল বিদ্যার পারদর্শী হইয়া কি করিতে পারিয়াছিলেন ? যদি জৰ্ম্মণে জন্ম পরিগ্রহ করিতেন, তবে তার এক আন বিদ্যাতে পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে একছত্ৰ করিতে পারিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় সংস্কৃতের স্বত্রানুস্বত্র ব্যবচ্ছেদ করিয়া অস্থি, চৰ্ম্ম, তন্তু পৰ্য্যন্ত তন্ন তন্ন করিয়া দেখিলেন,—শেষ বিধবাবিবাহ আর বহু বিবাহবাদ ভিন্ন আর ত কিছু ক্ষমতায় আসিল না! বাচস্পতি মহাশয়ের বাচস্পত্যই কাঙ্গালের ধন। সোমপ্রকাশের সম্পাদক মহাশয় চিরকাল কলম পিসিতেছেন, কিন্তু কি করিতে পারিলেন ? আর আমি যে ভিক্ষোপজীবী দরিদ্র ব্রাহ্মণ দুপাত হং, কং সং উপ্টাইয়া লম্বা লম্বা কথা কই, আমিই বা কি করিতেছি? যদি আর দুঙ্গত পশ্চিমে গিয়া জন্ম লইতাম, তবে এক এক কথা কাহন দরে বিক্রয় হইত। কত জাতির জন্ম কোষ্ঠী নিরূপণ করিতাম— গঙ্গাজলের সঙ্গে কুপোদকের সাদৃশ্য দেখাইতাম। কিন্তু, কি করিব ?--যে দেশের ভাষা, সেই খানেই জন্ম লইয়াছি ;—বিদেশী হইতে পারি নাই, এ জীবনে শব্দবিদ্যার মৰ্ম্ম জানা হইল না, মনের খেদ মনে রহিল । }.