পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৫০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দুসমাজের বর্তমান শোচনীয় অবস্থার কারণ কি? ৫০১ করে, আর আজকাল এমন মীমাংসাই বা কে করিতে জানে ? যে সব বিষয় বুঝিতে এখন অনেক বৈজ্ঞানিক পণ্ডিতের মস্তক ঘূর্ণিত হয়, সেই সমস্ত তত্ত্ব সহজে আর্য্যমহিলাগণ সেকালে প্রতীতি করিয়া ধন্য হইয়াছিলেন । যাহ। - দের এরূপ ধারণা যে স্ত্রীলোকের মন কোমল বিধায় তাহারা অতু্যচ্চ বৈজ্ঞানিক বা দার্শনিক তত্ত্বের মৰ্ম্মোদ্ভেদ করিতে সক্ষম নহেন, তাহারা প্রাগুক্ত সৎ দৃষ্টান্ত পাঠ করিয়া আপনাদের ভ্ৰমান্ধ মত সংশোধন করিবেন সন্দেহ নাই। এখন আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থা এত মন্দ হইয়া উঠিয়াছে যে স্ত্রী-পুরুষে সচরাচর এবম্বিধ কোন গুরুতর বিষয়ে কথোপকথন করিতেছেন প্রায় দৃষ্টিগোচর হয় না। এখনকার রমণীদের সঙ্গে যত পার রসাভাসেব প্রসঙ্গ কর, যাহাতে যুবতী রসিক বনিতার প্রমোদ বৃদ্ধি হয়, তদুপায় অবলম্বন কর, কিন্তু সাবধান ধৰ্ম্মালোচনা বা জ্ঞানালোচনায় প্রবৃত্ত হইও না । তাহা হইলেই তিনি চটিলেন, ফিরিলেন, উঠিলেন এবং চলিয়া গেলেন। তাহার নিকট স্বর্ণকারের কথা বল, সৰ্ব্বাঙ্গে ডাইমণ্ড কাটা গহনাসুটের কথা বল, হস্তে আসাসোটা বলয়ের প্রসঙ্গ কর, কর্ণমূলে ঝাড় লণ্ঠন, নাসিকাগে দেয়ালগিরি ও মস্তকে সামিয়ানার গল্প কর, একাগ্রাচিত্তে শুনিবেন, ভালবাসিবেন । এমন অবস্থায় নারীজাতির আভ্যন্তরিক অবস্থার উৎকর্ষ সাধন করা যে কি পৰ্য্যন্ত গুরুতর ব্যাপার, তাহ তাহারাই জানেন, যাহারা এ ভার গ্রহণ করিয়াছেন । যাহার এ মহাব্ৰতে ব্ৰতী, তাহারা ধন্য । তাই বলি এখন ছেলেদের উচ্চ শাব্দিক ভূয়া বিদ্যাশিক্ষার হস্ত হইতে অব্যাহতি দিয়া যেমন প্রকৃত ব্যবহারনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, ধৰ্ম্মনীতি ইত্যাদি অবশ্য-শিক্ষণীয় সার বিষয়গুলি তন্ন তন্ন করিয়া শিক্ষা দেওয়া কৰ্ত্তব্য, তেমনি আমাদের ভীরু বালিকা ও যুবতী বামাদিগকে ফাক বিদ্যার ফাঁদ হইতে নিস্কৃতি দিয়া প্রকৃত গাহস্থ্যিধৰ্ম্ম কি, কিরূপে শিশু পালন করিতে হয়, কিরূপে স্বামীর সেবা ও গুরুশুশ্ৰষা ও আত্মীয় স্বজন পোষণ করিতে হয়, কিরূপে সংসাৰ সংগ্রামে বীরপত্নীর ন্যায় রিপুযুদ্ধে জয়ী হইতে হয়, কিরূপে পতিমুখে স্বর্থী ও পতিদুঃখে দুঃখী হইয়া ঈশ্বরনিষ্ঠ হইয়া কালাতিপাত করিতে হয়, কিরূপে আত্মরক্ষা ও চরিত্ররক্ষা করিয়৷ ধৰ্ম্মভূষণে ভূষিত হইয়া ঐহিক ও পারত্রিক জীবনের লক্ষ্য সাধন করিতে হয়, এই সকল নিতান্ত প্রয়োজনীয় গাহ স্থ্য নীতি শিক্ষা দেওয়া উচিত। যিনি মুস্ত্রী, তিনি—