পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৫৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৬২ কল্পক্ৰম । প্রদীপটী জালিতে খেতে গুতে, যেতে কিছুতে লোকে নয় স্বাধীন! * বিদ্য শিক্ষা সম্বন্ধে যে কিছু স্বাধীনতা ছিল, তাহাও গিয়াছে । আর সে দেশীয় চিকিৎসা শাস্ত্র ও রসায়ন বিদ্যার অাদর নাই । বিলাতীয় ঔষধ ও পথ্যের ব্যবস্থায় এ দেশীয় লোকের স্বাস্থ্যমুখ দিন দিন অন্তহিত হইতেছে। এমনি দিন কাল পড়িয়াছে যে স্বাধীনভাবে বিছানায় গুইয়া রোগ ভোগ করিবারও যে নাই। এখন আইলবাধা দুই চারি খানি কোস (Course) গলাধঃকরণ করিতে পারিলেই ফুরাইল, বিদ্যা অগাধ হইল । লোকসমাজে চক্ষে চশমা দিয়া এপাস ওপাশ করিয়া বেড়াইতে পারিলেই বিদ্যার গুমর হইল। এরূপ পাশাপাশি করিয়া মরিবার অপেক্ষ মূর্থ হইয়া থাকা কি শ্রেয়ঙ্কর নহে ? ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে যদিও রাজা নিলিপ্ত, তথাপি ছঃখের বিষয় এ মুক্তিপথেও কাটা পড়িয়াছে। যাহারা পূৰ্ব্বে জীবন্মুক্ত হইয়া নিৰ্ভয়ে বনে বনে, পৰ্ব্বতে পৰ্ব্বতে, বিভুগুণগান করিয়া মুক্তহৃদয়ে ব্ৰহ্মনাদে বলিয়া গিয়াছেন যে

  • আনন্দং ব্রহ্মণোবিদ্বান ন বিভেতি কুতশ্চন। ” সেই আনন্দস্বরূপ পরব্রহ্মকে জানিয়া তিনি আর কাহা হইতেও ভয় প্রাপ্ত হন না। আজ র্তাহাদেরই কুলপুত্ৰগণ ধৰ্ম্মের নামে ঈশ্বরের নামে খড়গহস্ত হইতেছে। তাহদের ধৰ্ম্মস্পৃহা কেবল তিলক ও চৈতনচুটকিতে পৰ্য্যবসিত হইয়াছে ! বনে জঙ্গলে বেড়াইতে হয় বলিয়া পরিব্রাজক সন্ন্যাসীদের হাতে যে চিমটা ও কড়া থাকে, তাহাও শস্ত্রবিধির মধ্যে ফেলিয়া কাড়িয়া লওয়া উচিত ।

ইংরাজি লেখা পড়া শিখে লোকে স্বাধীন হইবে কি, দিন দিন মনের ভাব গোপন করিতে শিখিতেছে, কেন না মনোভাব প্রকাশ করিলে পাছে মুদ্রণবিধির অবমাননা হয়, পাছে ব্রিটিশরাজের অপযশ হয়, এই জন্য এখনকার শিক্ষার প্রভাবে কোন বস্তু প্রকাশ্ন না হইয়া সকলই লুকায়িত হইতেছে। গল্পে বাঙ্গালীর স্বাধীনভাবে গল্প করিয়া দিন কাটাইবার যোও নাই ! নাপিতের ক্ষুরভাড়, ছেলেদের ছুরি কাচি, মেয়েদের হাত বেড়া, জেলেদের বড়শা বড়শি, রাজমিস্ত্রির শাবল বাস্থলি, ঘরামীর দা, ছুতারের করতে বাটালি, কৃষকের লাঙ্গল কোদালী, কেরাণীর রুল পেন্সিল পৰ্য্যন্তও কি এই অসাধারণ আইনের অন্তর্গত করা যুক্তিসিদ্ধ নয় ? কেন না