পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৫৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতিবাদের প্রতিবাদ । Q>> এ কথাও যুক্তিযুক্ত বিবেচনা হয় না। “ শতায়ূবৈ পুরুষঃ ”—এই শ্রুতি বাক্যের আমরা সম্মান করি। যাদব বাবু দ্বিতীয় প্রতিবাদপত্রে লিখিয়াছেন, “ বিশেষতঃ পূৰ্ব্বকালে লোকের যে প্রকার দীর্ঘ পরমায়ু ছিল—ইত্যাদি ” তদানীন্তন লোক যতই দীর্ঘায়ু লাভ করুন, কিন্তু শত বৎসর পুরুষায়ু ইঙ্গ শ্রুতিসম্মত বাক্য। অন্যত্র যে দীর্ঘায়ুর কথা দেখা যায় তাহা যুগবিশেষের প্রশংসাবাদ ভিন্ন আর কিছুই নহে। তবে যদি কেহ দেড় শত কিম্বা ততোধিক কাল জীবিত থাকেন, সে কাদাচিৎক ঘটনা, তাহা কথন নিয়ম মধ্যে পরিগণিত নহে । বাল্মীকি ও ব্যাসের নাম পুরাণাদিতেই দৃষ্ট হয় ; অতএব তাহার কোন সময়ে জীবিত ছিলেন তাহাও পুরাণাদি দেখিয়া স্থির করিতে হইবে । আমার প্রথম প্রস্তাবে লিখিত ছিল—“ রামায়ণের উপাখ্যান মধ্যে যদি কিছু প্রকৃত ঘটনা থাকে, তাহা মহাভারতের পূৰ্ব্বে ঘটয়াছিল। ব্যাস স্বীয় কাব্যে চন্দ্রবংশোদ্ভব রাজাদের বৃত্তান্ত বর্ণনা করিবার কিছু পরে বাল্মীকি রামের ইতিহাস দেবর্ষি নারদের মুখে শুনিলেন এবং তাহা ভাব রস ও ছলো স্বশোভিত করিয়া জনসমাজে প্রকাশিত করিলেন । * যাদব বাবু ইহাতে ব্যঙ্গ করিয়া লিখিতেছেন— “ ভারত যুদ্ধের বহু পূৰ্ব্বে রামায়ণ বর্ণিত অদ্ভুত ব্যাপার ঘটিয়াছিল, কিন্তু লেখকভাবে বর্ণিত হয় নাই । পরে শত কি সহস্ৰ বৎসরান্তরে কুরু পাণ্ডবের যুদ্ধ ঘটনা হইল, বেদব্যাস সেই ঘটনা গ্রন্থাকারে প্রকাশ করিলে সেই সময় মহর্ষি বাল্মীকি প্রাচুভূতি হইয়া উহা পাঠ করিলেন, তখন গ্রন্থ প্রণয়নে র্তাহার বাসনা হইল, কিন্তু কি লিখিবেন ? তখন অতি বৃদ্ধ প্রপিতামহের আমলে কি ঘটনা হইয়াছিল, তাহাই খুজিয়া খুজিয়া রামায়ণ গ্রন্থ সংগ্ৰহ করিলেন। লেখকের কি চিন্তাশক্তি বলিহারি যাই! • আত্মবিশ্বতি সকলেরই আছে। কাহারও ভুল চুক হইলে আমরা তাহ দেখাইয়া দিই,—ইহাই যথার্থ সুহৃদের কাজ । আমরা সেই ভ্রম লইয়। এইরূপ কুটার্থ করিয়া কুলকভট্ট সকল দিক রক্ষা করিয়াছেন। কিন্তু এখন আর সে দিন পাই । এখন অস্বাভাবিক বিষয় কেহই বিশ্বাস করিবেন না।