পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৬৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏬᏄᏬ কল্পদ্রুম । এক দিকে গঙ্গাজলের অনুপম সৌন্দৰ্য্য আর এক দিকে বেগমের অনুচরবর্গের ধূম, তীর্থস্থান বিপুল উৎসব-বিধুননে চমকিত হইয়া উঠিল। বেগ মের সঙ্গে সাৰ্দ্ধসহস্ৰ পদাতিক, সহস্ৰ অশ্ব, তদ্ভিন্ন অসংখ্য হস্তী মহাসমরোহে তথায় উপস্থিত হইল। সহচর দাস দাসী নবাব ও রাজার গণনা নাই । গজপৃষ্ঠে নানা রত্নে খচিত রজতে মণ্ডিত মুক্তা-ঝালর শোভিত বিচিত্র চিত্র বসন পরিবেষ্টিত হাওদা দর্শকদিগকে মোহিত করিল । চারি চাকার গাড়ী, দুই চাকার গাড়ী শুভ্রবস্ত্রে পরিবৃত, অগণ্য পান্ধি অগণ্য দোলা সকলি রত্নভরে অবনত নানা সজ্জায় উপশোভিত। এরূপ শোভা সচরাচর দৃষ্ট হয় না। পাণ্ডারা অতুল ধনলাভ করিল, ভিক্ষুদের আশা কথঞ্চিৎ পরিতৃপ্ত হইল। দোকানী পসারী বিলক্ষণ দশ টাকা লাভ করিল। বেগম হরিদ্বারের প্রধান ঘাটে উত্তীর্ণ হইলেন, স্নান করিয়া পুণ্য সঞ্চয় করিলেন । এই প্রধান ঘাটট পূৰ্ব্বে এত প্রশস্ত ছিল না। সে কারণ লোকের ভিড়ে অনেক দুৰ্ব্বল ব্যক্তি প্রাণত্যাগ করিত। এইরূপ কথিত আছে যে,এক বার তিন শত লোক যাত্রিদিগের পদভরে মর্দিত হইয়৷ পঞ্চত্ন পাইয়াছিল। । দূরদেশ হইতে যে সকল সাধারণ গৃহস্থ যাত্রী আইসে ; তাহারা প্রায় অহোরাত্রের অধিক কাল থাকিতে পারে না । হরিদ্ধারে বাস করা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ । কেহ কেহ তিন দিনও বাস করে । যাত্রীর প্রস্থান কালে কিছু কিছু তীৰ্থজল সঙ্গে লইয়া যায় এবং কেহ কেহ খেলেন ও অন্যান্য সামগ্ৰীও ক্রয় করে। উট হস্তী ও অশ্বক্রেতার প্রায় তীর্থযাত্ৰী নহেন। র্তাহার। সচরাচর ঐ সকল দ্রব্য ক্রয় করিবার মানসেই আসিয়া থাকেন। হরিদ্বারের হস্তী বিক্রেতার বলেন যে, যে হস্তীর মস্তক ও কর্ণ বৃহৎ, ধন্থরাকৃতি বক্র পৃষ্ঠদেশ, পাশ্ব দ্বগ্ন গড়ানে, শুও পদ্মকবিন্দুতে অকুরঞ্জিত, ক্ষুদ্র পা তন্মধ্যে সম্মুখস্থ পদদ্বয় অগ্রভাগে বক্র এবং লাস্কুলে প্রশস্ত পুচ্ছগুচ্ছ সেই হস্তীই বুদ্ধিমান বলিষ্ঠ শাস্তু শিষ্ট ও বহুমূল্য। ঘোড়া বিক্রেতার ক্রেতৃদিগকে প্রায় সৰ্ব্বদা ঠকাইয়া থাকে। তাহারা নিতান্ত শীর্ণ ও অকৰ্ম্মণ্য ঘোড়াকেও তেজস্বী অশ্বের মত সকল মুলক্ষণাক্রান্ত করিতে পারে। অশ্বব্যবসায়ীরা কিঞ্চিৎ শুঠ ও অন্যান্য উত্তেজক দ্রব্য বাটিয়া ঘোড়ার গুহ্য মধ্যে প্রবেশ করিয়া দেয়। ঘোটক তাহার জালায় চটুল চরণাঘাতে লেজ আপসাইয়া খটখট করিয়া বেড়ায় । অশ্বক্রেতা তাহাকে তেজস্বী তাজী ভাবিয়া বহুমূল্যে ক্রয় করে।