পাতা:কল্পনা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গ্রন্থপরিচয়

কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী, শ্রীযুক্ত অমলচন্দ্র হোম, শ্রীযুক্ত সমীরচন্দ্র মজুমদার, ইঁহাদের সৌজন্যে কল্পনার অনেক গুলি কবিতার পাণ্ডুলিপি দেখিবার সুযোগ পাওয়া গিয়াছে, এবং ওই-সকল পাণ্ডুলিপি মিলাইয়া কল্পনার নূতন সংস্করণে অনেক কবিতা-রচনার স্থানকাল নির্দেশ করা বা তৎসম্পর্কিত দু-একটি ভ্রম সংশোধন করা সম্ভব হইয়াছে।


‘ভিক্ষায়াং নৈব নৈব চ’ কবিতাটি কল্পনা হইতে বাদ পড়িয়াছিল। উহা নূতন সংস্করণে পুনঃসন্নিবিষ্ট হইল।


‘আমার ধর্ম’ প্রবন্ধে ‘অশেষ’ ও ‘বর্ষশেষ’ কবিতা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছেন—

 এর [‘এবার ফিরাও মোরে’ কবিতা রচনার] পর থেকে বিরাটচিত্তের সঙ্গে মানবচিত্তের ঘাত-প্রতিঘাতের কথা ক্ষণে ক্ষণে আমার কবিতার মধ্যে দেখা দিতে লাগল। দুইয়ের এই সংঘাত যে কেবল আরামের, কেবল মাধুর্যের, তা নয়। অশেষের দিক থেকে যে আহ্বান এসে পৌঁছয় সে তো বাঁশির ললিত সুরে নয়।··· এ আহ্বান এ তো শক্তিকেই আহ্বান, কর্মক্ষেত্রেই এর ডাক; রসসম্ভোগের কুঞ্জকাননে নয়।··

 এমনি করে ক্রমে ক্রমে জীবনের মধ্যে ধর্মকে স্পষ্ট করে স্বীকার করবার অবস্থা এসে পৌঁছল। যতই এটা এগিয়ে চলল ততই পূর্বজীবনের সঙ্গে আসন্ন জীবনের একটা বিচ্ছেদ দেখা দিতে লাগল। অনন্ত আকাশে বিশ্বপ্রকৃতির যে শান্তিময় মাধুর্য-আসনটা পাতা ছিল সেটাকে হঠাৎ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে বিরোধবিক্ষুব্ধ মানবলোকে রুদ্রবেশে কে দেখা দিল! এখন থেকে দ্বন্দের দুঃখ, বিপ্লবের আলোড়ন। সেই নূতন বোধের অভ্যুদয় যে কি-

১২৭