পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰহার করিতেও অনেকে কুষ্ঠিত হয় না। কেহ কেহ আবার মাতাকে দাসীকাৰ্য্যে নিযুক্ত করিয়া, প্ৰণয়িনী ও তদীয় জননী ও ভ্রাতাভগিনীর মনস্তুষ্টি করিতে কিছু মাত্র লজ্জাবোধ করিতেছে না। লোকের অবিহিত অর্থাপিপাসা এতই বলবতী যে, তন্নিমিত্ত তাহারা না করিতেছে এরূপ দুষ্কাৰ্য্য নাই। বিলাসবাসনা চরিতার্থের নিমিত্ত জ্ঞানবিবেকবিশিষ্ট মনুষ্যগণ যে সকল ঘূণাকর কাৰ্য্যের অনুষ্ঠান করিতেছে, পশুপক্ষী ইতর জন্তুগণও উদারপোষণের নিমিত্ত তাহা করিতে জানে না । লোকে যতই কেন সভ্যতার গৌরব না করুক, বা আপনাআপনি সভ্য বলিয়া বিখ্যাত না হউক, বাস্তবিক পৃথিবী ক্রমে পশুভাবে পূর্ণ হইতেছে। প্রজােরক্ষাব্যপদেশে, অর্থ ও স্বার্থের নিমিত্ত এক ভূপতি অন্য ভূপতির সহিত বিবাদ, কলহ ও সংগ্ৰাম করিয়া, অকারণে লক্ষ লক্ষ মহাপ্ৰাণীর রক্তে পৃথিবীকে দূষিত করিতেছে। সিংহ ব্যান্ত্র প্রভৃতি ইতর জন্তুর যুদ্ধে আর ইহাদিগের যুদ্ধে এইমাত্র প্রভেদ যে, তাহাতে একটা কি দুইটী হতাহত হয়, ইহাদিগের এক একদিনের সংগ্রামে সহস্ৰ সহস্ৰ মহাপ্ৰাণী হতাহত হইয়া থাকে। শোকে আনন্দময়ী পৃথিবী নিরন্তর অশ্রুবর্ষণ ও হাহাকার করিতেছেন । দ্বেষ হিংসা ও ব্যভিচারে শান্তিসুখের লোপাপত্তির এবং কু-প্রবৃত্তির আধিপত্যে রোগ, শোক, জরা ও অকালমৃত্যুর অবিরল সদ্ভাবে পৃথিৰী পরিপূর্ণ। যে যত বঞ্চক, পরপীড়ক, পরদ্রোহী এবং কুটিল, যে লোকের অপকার যতই উপকার বলিয়া দেখাইতে পারে, পৃথিবীতে সেই ততই জ্ঞানী, সভ্য ও বুদ্ধিমান বলিয়া বিখ্যাত ।” উপরিউদ্ধৃত কথা কয়েকটী পাঠ করিলে কাঙ্গাল হরিনাথের মহান দেবহৃদয়ের পরিচয় প্ৰাপ্ত হওয়া যায়। তিনি গভীর ক্ষোভে ও বিষাদে যে সমস্ত কথা বলিতেছেন, তাহা তাঁহার মুখের কথা নহে, তাহা বক্ত > R