পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখন একবার নিজের বুদ্ধি, জ্ঞান, ও বিবেকের সহিত সংযুক্ত পূৰ্ব্বক চিন্তা করিয়া দেখ, অতি পরিষ্কাররূপে ইহাই প্ৰতীতি হইবে যে, ব্রহ্মের যখন সৃষ্টির ইচ্ছা প্ৰকাশ না হয়, তখনই তিনি নিগুৰ্ণ ; কিন্তু নাস্তিকের “নাস্তি”র মত এই নিগুণ যে কিছুই নহে, এরূপ মনে করিও না। মাকড়সা যেমন বিস্তৃত জাল গুটিাইয়া উদারস্থ করে, মহাপ্ৰলয়কালে ব্ৰহ্ম তদ্রুপ এই পরিদৃশ্যমান ব্ৰহ্মাণ্ডজাল গুটািইয়া আপনাতে লিপ্ত করেন। নিরাকারসাকার, ভৌতিক-সাকার সূক্ষ্মী-স্কুল, যে কোন মহিমা বা গুণ ব্ৰহ্মাণ্ডে আছে, তৎসমুদায়ই ব্ৰহ্মে লীন হইয়া থাকে। কেবল ব্ৰহ্মের ইচ্ছা প্ৰকাশ থাকে না ; এই কারণে তৎসমুদায়েরও প্ৰকাশ বিস্তৃতি হয় না। অতএব ব্ৰহ্মে ইচ্ছা যখন প্ৰকাশ থাকে, তখনই তিনি নিগুণ। নতুবা যিনি নিগুণের অর্থ “কিছু নহে” মনে করেন, তিনি নিতান্ত ভ্ৰমে পতিত るポ| ব্ৰহ্ম স্ব-প্ৰকাশ অর্থাৎ তিনি আপনার ইচ্ছ। আপনিই প্ৰকাশ করেন ; র্তাহার ইচ্ছা প্ৰকাশের অন্য কারণ নাই। কারণ আর কোথায় থাকিবে ? সকল কারণের কারণ যে র্তাহাতেই লিপ্ত রহিয়াছে ; তিনি ভিন্ন তখন আর কিছুই নাই। ব্ৰহ্ম ভিন্ন আর কিছু নাই কেন ? যে মায়ার নিমিত্ত জগৎ ব্ৰহ্ম হইতে বিভিন্ন বোধ হয়, সেই মায়া যদি না থাকে, তাহা হইলে এখনও ব্ৰহ্ম ভিন্ন আর কিছু নাই, পরেও আর কিছু থাকিবে না। ঐন্দ্ৰজালিকের ঐন্দ্ৰজাল-ক্রীড়া সাঙ্গ হইলে সে যেমন তেমনই থাকে, কেবল ক্রীড়াই থাকে না, সেইরূপ পরেও ব্ৰহ্মই থাকেন, আর কিছু থাকে না। এই নিগুণ ব্ৰহ্ম যখন আপনাকে বিস্তৃত করিতে অর্থাৎ তিনি এক ছিলেন, আপনাকে অসীম অনন্তরূপে প্ৰকাশ করিতে ইচ্ছা করেন ; সেই ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গে তাহার গুণেরও প্ৰকাশ হয়। অতএব ইচ্ছা প্ৰকাশের সঙ্গে সঙ্গেই নিগুণ 'সগুণ হইয়া থাকে। অর্থাৎ যখন তাহার ইচ্ছা