পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰকাশ হয় না, তখনই তিনি নিগুণ ; যখন ইচ্ছা প্ৰকাশ হয়, তখনই তিনি সগুণ । এস্থলে এ কথা বলিলে আরও সহজ হয়, ইচ্ছা অপ্ৰকাশের নাম নিগুণ, আর ইচ্ছা প্ৰকাশের নামই সগুণ । এই সগুণ আবার দুই প্ৰকার-নিরাকার ও সাকার। যখন কেবল ভাবময় জ্যোতিমাত্র, তখনই নিরাকার ; যখন সেই নিরাকার জ্যোতিঃ কোন অবয়ব-বিশিষ্ট হয়, তখনই নিরাকার-সাকার। সাধনসিদ্ধির সময় সাধনের ধন ভগবানচন্দ্ৰ জ্যোতিৰ্ম্ময় নিরাকার-সাকাররূপেই সাধকের হৃদয়মন্দিরে প্রকাশিত হইয়া থাকেন। যাহারা ঐ প্রকারে ভগবানকে দর্শন করিয়াছেন, কেবল তাহারাই বলিয়া থাকেন—“প্ৰাপ্তির ঘরে জ্যোতিৰ্ম্ময়, মারা যায় যে এ নিরাকার” ইহা কেবল গ্রন্থলিখিত উপদেশ-বাক্য নহে, সাধকের আত্মপ্ৰত্যক্ষ ও সত্য । * অতএব সাকার আবার দুই প্ৰকার-নিরাকার-সাকার ও ভৌতিকসাকার। নিরাকার-সাকারে যেমন অবয়ব-বিশিষ্ট, তদ্রুপ মুক্ত, জ্যোতিৰ্ম্ময় অসীম ও অনন্ত-কেবল আত্ম-প্ৰত্যক্ষ। অর্থাৎ ইন্দ্ৰিয়ের দ্বারা তাহা দেখা যায় না, কেবল আত্মাতেই তাহ প্ৰকাশ হইয়া থাকে ; এবং তাহার জন্ম মৃত্যু নাই-প্রকাশ অপ্রকাশ আছে। আবার ভৌতিক সাকারও অবয়ববিশিষ্ট ; কিন্তু নিরাকার-সাকারের ন্যায় মুক্ত নহে। ইহা আবদ্ধ এবং ইতার জন্ম মৃত্যু আছে। অর্থাৎ নিরাকার সাকার যেমন ইচ্ছানুসারে সৰ্ব্বত্র ভ্রমণ ও আপনাকে প্ৰকাশ ও অপ্ৰকাশ করিতে পারে, ভৌতিকসাকার তাহ পারে না । শঙ্খ, শম্বুক প্ৰভৃতি জন্তু যেমন এক স্থান হইতে অন্য স্থানে গমন করিতে ইচ্ছা করিলে তাহার সঙ্গে সঙ্গে তাহার উপরের ঘরস্বরূপ আবরণও চলে, তদ্ৰপ ভৌতিক-সাকারের অবয়বরূপ ঘর অর্থাৎ শরীরও চলিয়া থাকে ; এবং সে ইচ্ছা করিলে আপনাকে প্ৰকাশ ও অপ্ৰকাশ করিতে পারে না। প্ৰকাশ হইতে হইলে জন্ম এবং অপ্ৰকাশ VO)