পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তবে, ব্ৰহ্ম পূর্ণ শক্তিমান, আর আচাৰ্য্য যেমন সেইরূপই, অপূর্ণ শক্তিমান, এইমাত্র বিশেষ। যিনি ব্ৰহ্মবাক্য বেদের ন্যায় আচাৰ্য্যের কথা না শুনেন, অর্থাৎ আচাৰ্য্য যেরূপ কাৰ্য্য করিতে উপদেশ দেন, তদ্রুপ কাৰ্য্য না করেন, তঁহার আচাৰ্য্য-শুশ্ৰষ হয় না। যে ব্যক্তি আচাৰ্য্যের বাক্য অনুসারে চলে না, অথচ পূজনাদি র্তাহার সেবা করিয়া থাকে, সে ব্যক্তি আচাৰ্য্যসেবা বিষয়ে ব্যভিচার করে। এই ব্যভিচারের ফলে, উক্ত ব্যক্তি কোন বিষয়েই সিদ্ধিলাভ করিতে পারে না । লোকে যে গুরুর নিকট উপদেশ ও মন্ত্র গ্ৰহণ করিয়াও ঈশ্বরে অবিশ্বাসী, স্বেচ্ছাচারী ও নাস্তিক হইয়া উঠে, গুরুসেবা-শুশ্রুষার ব্যভিচারই তাহার কারণ। এখন কিন্তু গুরু ও শিষ্য আছেন, অথচ স্বেচ্ছাচার পাপাচার ব্যভিচার ও নাস্তিকতার অবধি নাই । ইহার প্রধান কারণ, আচাৰ্য্যের অন্তনাস্তিকতা ; দ্বিতীয় কারণ শিষ্য আচাৰ্য্য-সেবা করিতে জানেন না এবং আচাৰ্য্যও প্ৰকৃত শিষ্যপালন জানেন না । পিতামাতার সন্তান-পালন অপেক্ষাও আচাৰ্য্য-সেবা গুরুতর। অধিকাংশ গুরুশিষ্য তাহা নহেন। পিতামাতার পালনে জীবের শরীর বদ্ধিত হয় এবং আচাৰ্য্যের পালনে আত্মার উন্নতি হইয়া থাকে। এখনকার গুরুগণের মধ্যে আত্মা কি, শরীর কি, ইহাও অনেকে জানেন না। আবার শিষ্যগণ আচাৰ্য্যকে আপনার ন্যায় সামান্য মানুষ বিবেচনা করিয়া থাকেন। অতএব শিষ্যের প্রতি আচাৰ্য্যের কৰ্ত্তব্যের ব্যভিচার এবং আচাৰ্য্যের প্রতি শিষ্যের কৰ্ত্তব্য-ব্যভিচার, এই উভয় ব্যভিচার যুক্ত হইয়া যে পরম ব্যভিচারের উৎপাদন করিয়াছে, তাহতেই গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ নষ্ট হইয়া পৃথিবীতে স্বেচ্ছাচারিত নাস্তিকতার প্রবাহ বৃদ্ধি করিতেছে। আধুনিক পণ্ডিতগণ গুরু-শিষ্য ব্যতীত যে কোন উপায় অবলম্বন করিয়া ব্ৰহ্মতত্ত্ব বা ব্ৰহ্মজ্ঞান প্রচার করিতে যত্ন বা চেষ্টা করুন, কিছুতেই কৃতকাৰ্য্য ዓህ”