পাঠাইয়া দিলেন। ফলতঃ গন্ধর্ব্বরাজকুমারীর সেইরূপ অবস্থা দেখিয়া তৎকালে তথা হইতে আপনার প্রত্যাগমন করায় নিতান্ত নিঃস্নেহতা প্রকাশ হইয়াছে; এটি যুবরাজের উপযুক্ত কর্ম্ম হয় নাই। এই কথা বলিয়া পত্রলেখা ক্ষান্ত হইল।
চন্দ্রাপীড় স্বভাবতঃ ধীরপ্রকৃতি হইয়াও কাদম্বরীর আদ্যোপান্ত বিরহবৃত্তান্ত শ্রবণে সাতিশয় অধীর হইলেন; এমন সময়ে প্রতীহারী আসিয়া কহিল, যুবরাজ! পত্রলেখা আসিয়াছে, এই সংবাদ শুনিয়া মহিষী পত্রলেখার সহিত আপনাকে অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতে আদেশ করিলেন। অনেক ক্ষণ আপনাকে না দেখিয়া অতিশয় ব্যাকুল হইয়াছেন। চন্দ্রাপীড় মনে মনে কহিলেন, কি বিষম সঙ্কট উপস্থিত। এক দিকে গুরু জনের স্নেহ, আর দিকে প্রিয়তমের অনুরাগ। মাতা না দেখিয়া এক দণ্ড থাকিতে পারেন না, কিন্তু পত্রলেখার মুখে প্রাণেশ্বরীর যে সংবাদ শুনিলাম, ইহাতে আর বিলম্ব করা বিধেয় নয়। কি করি, কাহার অনুরোধ রাখি। এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে অন্তঃপুরে প্রবেশিলেন। গন্ধর্ব্বনগরে কিরূপে যাইবেন দিন যামিনী এই ভাবনায় অতিশয় ব্যাকুল হইতে লাগিলেন। কতিপয় বাসর অতীত হইলে একদা বিনোদের নিমিত্ত শিপ্রানদীর তীরে ভ্রমণ করিতেছেন এমন সময়ে দেখিলেন, অতি দূরে কতকগুলি অশ্বারোহী আসিতেছে। তাহারা নিকটবর্ত্তী হইলে দেখিলেন অগ্রে কেয়ূরক, পশ্চাতে কতিপয় গন্ধর্ব্বদারক। রাজকুমার কেয়ূরককে অবলোকন করিয়া পরম পুলকিত হইলেন এবং প্রসারিত ভুজযুগল দ্বারা আলিঙ্গন করিয়া সাদর সম্ভাষণে কুশলবার্ত্তা জিজ্ঞাসিলেন। অনন্তর তথা হইতে বাটী আসিয়া নির্জ্জনে গন্ধর্ব্বকুমারীর সন্দেশবার্ত্তা জিজ্ঞাসা করাতে কহিল, আমাকে তিনি কিছুই বলিয়া দেন নাই। আমি মেঘনাদের নিকট পত্রলেখাকে রাখিয়া ফিরিয়া গেলাম এবং রাজকুমার উজ্জয়িনী গমন করিয়াছেন এই সংবাদ দিলাম। মহাশ্বেতা শুনিয়া ঊর্দ্ধে দৃষ্টিপাত ও দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্ব্বক