পাতা:কাদম্বরী.djvu/১২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১৮
কাদম্বরী।

দিও। সাবধান, যেন মদারোপিত অশোকতরুর বাল পল্লব কেহ খণ্ডন না করে। শয়নের শিরোভাগে কামদেবের যে চিত্রপট আছে, তাহা গতমাত্র পাটিত করিও। কালিন্দী শারিকা ও পরিহাস শুককে বন্ধন হইতে মুক্ত করিয়া দিও। আমার প্রীতিপাত্র হরিণটীকে কোন তপোবনে রাখিয়া আসিও। নকুলীকে আপন অঙ্কে সর্ব্বদা রাখিও। ক্রীড়াপর্ব্বতে যে জীবঞ্জীবকমিথুন এবং আমার পাদসহচরী যে হংসশাবক আছে, তাহারা যাহাতে বিপন্ন না হয়, এরূপ তত্ত্বাবধান করিও। বনমানুষী কখন গৃহে বাস করে না, অতএব তাহাকে বনে ছাড়িয়া দিও। কোন তপস্বীকে ক্রীড়াপর্ব্বত প্রদান করিও। আমার এই অঙ্গের ভূষণ গ্রহণ কর, ইহা কোন দীন ব্রাহ্মণকে সমর্পণ করিও। বীণা ও অন্য সামগ্রী যাহা তোমার রুচি হয় আপনি রাখিও। আমি এক্ষণে বিদায় হইলাম, আইস, একবার জন্মের শোধ আলিঙ্গন ও কণ্ঠগ্রহণ করিয়া শরীর শীতল করি। চন্দ্রকিরণে, চন্দনরসে, শীতল জলে, সুশীতল শিলাতলে, কমলিনীপত্রে, কুমুদ কুবলয় ও শৈবালের শয্যায় আমার গাত্র দগ্ধ ও জর্জ্জরিত হইয়াছে। এক্ষণে প্রাণেশ্বরের কণ্ঠ গ্রহণ পূর্ব্বক উজ্জ্বলিত চিতানলে শরীর নির্ব্বাপিত করি। মদলেখাকে এই কথা বলিয়া মহাশ্বেতার কণ্ঠ ধারণ পূর্ব্বক কহিলেন, প্রিয়সখি! তুমি আশারূপ মৃগতৃষ্ণিকায় মোহিত হইয়া ক্ষণে ক্ষণে মরণাধিক যন্ত্রণা অনুভব করিয়া সুখে জীবন ধারণ করিতেছ। এই অভাগিনীর আবার সে আশাও নাই। এক্ষণে জগদীশ্বরের নিকট প্রার্থনা, যেন জন্মান্তরে প্রিয়সখীর দেখা পাই। এই বলিয়া চন্দ্রাপীড়ের চরণদ্বয় অঙ্কে ধারণ করিলেন। স্পর্শমাত্রে চন্দ্রাপীড়ের দেহ হইতে উজ্জ্বল জ্যোতিঃ উদ্গত হইল। জ্যোতির উজ্জ্বল আলোকে ক্ষণকাল সেই প্রদেশ কৌমুদীময় বোধ হইল।

অনন্তর অন্তরীক্ষে এই বাণী বিনির্গত হইল, “বৎসে মহাশ্বেতে! আমার কথার আশ্বাসে তুমি জীবন ধারণ করিতেছ। অবশ্য প্রিয়তমের সহিত সাক্ষাৎ হইবে, সন্দেহ করিও না। পুণ্ডরীকের