এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
স্তোত্রঃ--ত্রৈলোক্য পূজিতে দেবি কমলে বিষ্ণুবল্লভে ।।
সত্যবতীর প্রাণত্যাগ। কতদিন পরেতে আইল বেদব্যাস। একান্তে কহেন মুনি জননীর পাশ।। অবধানে শুন মাতা আমার বচন। পুণ্যকাল গেল পাপকাল আরম্ভম।। তোমার বংশেতে হবে বড় দুরাচার। কাপট হইবে বড় হিংসা অহঙ্কার।। এই সবাকার পাপে মজিবে সকল। পৃথিবী হরিবে শশ্য মেঘে অল্প জল।। ধর্ম্মলুপ্ত হইবেক যত দ্বিজবর। আত্ম আত্ম হিংসা করিবে বিস্তর।। ধৃতরাষ্ট্র-কপটে হইবে কূলক্ষয়। ধর্ম্ম ত্যাজি নরে লবে অধর্ম্ম আশ্রয়।। সে কারণে মাতা আমি কহি যে তোমায়। কুলক্ষয় নয়নে দেখিতে না যুয়ায়।। এত বলি ব্যাস মুনি হইল অন্তর্দ্ধান। শুনি সত্যবতী চিত্তে চিন্তেন বিধান।। দুই বধু ডাকিয়া আনিল নিজ পাশ। কহিতে লাগিল যত কহিলেন ব্যাস।। তোমার নন্দন বধূ করিবে দূর্নীতি। কপট হিংসুক হবে করিবে দুষ্কৃতি।। কুলক্ষয় হইবেক তার কদাচারে। এ সব শুনিয়া আমি জানাই তোমারে।। সে কারণে সাধ মম যাই তপোবনে। করহ বিধান বধূ যেই লয় মনে।। শুনিয়া যুগলবধূ চলিল সংহতি। ভীষ্মে আনি সব কথা কহিলেন সতী।। অন্তঃপুরে ছিল যত বৃদ্ধা নারীগণ। সত্যবতীসহ সবে গেল তপোবন।। ফলমূলাহারী হৈয়া তপ আচারিল। যোগে মন দিয়া সব শরীর ত্যাজিল।। মহাভারতের কথা অমৃত প্রস্তাবে। পাঁচালী প্রবন্ধে গায় কাশীরাম দেবে।। ------- ভীমের বিষপান। মুনি বলে রাজা শুন অতঃপরে। পুত্রসহ কুন্তীদেবী রহে অন্তঃপুরে।। কৌরব পাণ্ডব ভাই পঞ্চত্তর শত। বেদশাস্ত্র অধ্যয়নে সবে পারগত।। বালকের ক্রীড়া যত আছয়ে সংসারে। ক্রীড়ায় উত্তম সবে সদা ক্রীড়া করে।। ক্রীড়ারসে বলে শ্রেষ্ঠ পঞ্চ সহোদর। সবার অধিক বল বীর বৃকোদর।। যাইতে পবন সম সিংহ সম হাঁকে। আস্ফালনে গজ সম মেঘ সম ডাকে।। যেই দিক্ দিয়া ভীম বেগে যায় চলি। দশ বিশ ভূমে ফেলে ভুজাষ্ফলে ঠেলি।। ক্রোধে সব সহোদরে ধরে একেবারে। অবহেলে বৃকোদর শরীর ঝাঁকারে।। দুই হস্তে ধরে বীর সবাকার কর। চক্রাকার করিয়া ঘুরায় বৃকোদর।। প্রাণ যায় যায় বলি পরিত্রাহি ডাকে। মৃতকল্প দেখি তবে তারে ভীম রাখে।। জলমধ্যে ক্রীড়া সব করে ভ্রাতৃগণ। একবারে ধরে ভীম দশ দশ জন।। জলের ভিতরে চুবে চাপি দুই কাঁখে। মৃতকল্প করি ছাড়ে প্রাণমাত্র রাখে।। ভয়েতে ভীমের কেহ না যায় নিকটে। জলেতে দেখিলে ভীম সবে থাকে তটে।। ফলহেতু উঠে সবে বৃক্ষের উপরে। তলে থাকি বৃক্ষে ভীম চরণ প্রহারে।। চরণের ঘায় বৃক্ষ করে থর থর। ফলসহ ভুমে পড়ে সর্ব্ব সহোদর।। বালককালেতে ভীম মহাপরাক্রম। ভীমেরে বালকগণ দেখে যেন যম।। দুর্য্যোধন দেখি হইল পরম চিন্তিত। বালককালেতে বল ধরে অপ্রমিত।। বয়োধিক হইলে হইবে মহাবল। ইহার জীবনে নাহি আমার কুশল।।