এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
পদ্মা পদ্মালয়া সম্প-দী চ শ্রীঃ পদ্মধারিণী।
ভীমে সচেতন দেখি বলে নাগগণ। আপন আলয়ে তুমি করহ গমন।। ভাইসব শোকাকুল কান্দয়ে জননী। অষ্টদিন হৈল্কোন বার্ত্তা নাহি শুনি।। এত বলি নাগগণ নানা রত্ন দিয়া। স্কন্ধে করি প্রমাণকোটিতে থুল গিয়া।। তথা হৈতে চলে বীর বীর মদে মাতি। আপন মন্দিরে উত্তরিল শীঘ্রগতি।। মায়ে প্রণমিয়া প্রণমিল যুধিষ্ঠিরে। তিন ভাই আলিঙ্গিয়া চুম্ব দিল শিরে।। জিজ্ঞাসেন কোথা ভাই এতদিন ছিলা। আমা সব পরিহরি কেমনে রহিলা।। শুনিয়া কহিল যত সব বিবরণ। যেই মত দুর্য্যোধন করিল বন্ধন।। সন্দেশ বলিয়া বিষ দিল মম মুখে। গঙ্গাজলে ভাসিয়া গেলেম নাগলোকে।। নাগগণ দংশনে পুনঃ হৈল চেতন। বাসুকি দিলেন সুধা করিতে ভক্ষণ।। এত বলি রত্ন সব দিল মাতৃস্থানে। চমকিত যুধিষ্ঠির সেই বিবরণে।। যুধিষ্ঠির বলে ভাই শুন চারিজনে। এই সব কথা যেন কেহ নাহি শুনে।। দুর্য্যোধন দুষ্ট, কেহ না যাবে বিশ্বাস। একা হৈয়া কেহ নাহি যাবে তার পাশ।। হেনমতে বিচার করেন পঞ্চজন। সেই হৈতে বাল্যক্রীড়া হইল বর্জ্জন।। মহাভারতের কথা অমৃত-সমান। কাশীরাম দাস কহে শুনে পূন্যবান।। ------ কৃপাচার্য্যের জন্ম। তবে কতদিনে ভীষ্ম গঙ্গার নন্দন। অস্ত্রশিক্ষা হেতু নিয়োজিল পৌত্রগণ।। সর্ব্বশাস্ত্রে বিশারদ কৃপাচার্য্য নাম। শরদ্বান ঋষিপুত্র হস্তিনায় ধাম।। পঞ্চোত্তর শত ভাই কৌরব পাণ্ডব। কৃপাচার্য্য ধনুর্ব্বেদ শিখাইল সব।। জন্মেজয় কহিলেন কহ মহাশয়। ক্ষত্রধর্ম্ম কৈল কেন ব্রাম্ভণতনয়।। মুনি বলিলেন নৃপ কর অবধান। গৌতম ঋষির পুত্র নাম শরদ্বান।। শরদ্বান্ নাম হৈল শরসহ জন্ম। ধনুর্ব্বেদে রত হৈল ত্যাজি দ্বিজকর্ম্ম।। বেদশাস্ত্র নাহি পড়ে ধনুর্ব্বেদে মন। তপোবন মধ্যে তপ করে অনুক্ষণ।। তার তপ দেখিয়া সশঙ্ক শতক্রতু। সৃজিলেন উপায় সে তপোভঙ্গ হেতু।। জানপদী দেবকন্যা দেন পাঠাইয়া। যথা তপ করে তথা উত্তরিল গিয়া।। কন্যা দেখি শরদ্বান হইল অধৈর্য্য। ধনুঃশর খসিল স্খলিত হৈল বীর্য্য।। স্খলিত হৈতে মুনি হৈল অচেতন্। সে বন ত্যাজিয়া মুনি গেল অন্য বন।। যাইতে ঋষির বীর্য্য পড়িল ভূতলে। দুই ঠাঁই হইয়া পড়িল সেই স্থলে।। তপস্বী ঋষির বীর্য্য কভু নষ্ট নয়। এক গুটি কন্যা হৈল একটি তনয়।। শান্তনু নৃপতি গেল মৃগয়া কারণ। ভ্রমিতে ভ্রমিতে গেল সেই তপোবন।। অনাথ যুগল শিশু দেখি অনুচরে। আস্তে ব্যস্তে জানাইল রাজার গোচরে।। শুনিয়া গেলেন রাজা ভাবি চমৎকার। দেখেন রোদন করে কুমারী কুমার।। ধনুঃশর আছে আর আছে মৃগচর্ম্ম। অনুমানে জানলেন ঋষির আশ্রম।। গৃহে আনি দোঁহাকারে করেন পালন। কতদিনে আইলেন শরদ্বান তপোধন।। শরদ্বান বলে রাজা তুমি ধর্ম্মময়। কৃপায় পুষিলা সেই তনয়া তনয়।। সে কারণে নাম রাখিলাম দোঁহাকার। কৃপ কৃপী নাম হেন ঘোষয়ে সংসার।। তবে শরদ্বান্ মুনি আপন নন্দনে। নানা অস্ত্রবিদ্যা শিখাইলেন দিনে দিনে।।