এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বেদবেদান্ত বেদাঙ্গ বিদ্যাস্থানেভ্য এ বচ।।
হরষিত কুন্তীদেবী ডাকে যুধিষ্ঠিরে। যুধিষ্ঠির প্রশংসা করেন বৃকোদরে।। রজনী প্রভাত হৈল উদয় অরুণ। বাহির হৈল যত নগরের জন।। দেখিয়া সকল লোক হৈল চমৎকার। পড়িয়াছে বক যেন পর্ব্বত আকার। কেহ বলে এ কর্ম্ম করিল কোন জন। কেহ বলে নিষ্কণ্টক হৈল সর্ব্বজন।। বিচারিয়া বলে সব নগরের জন। তদন্ত জানহ বকে কে কৈল নিধন।। কালিকার ভোজ্য যার আছিল পঞ্চক। সেই বলিবারে পারে বকের অন্তক।। ব্রাম্ভণের ঘরে বলি জানিল নির্নিত। সবে মেলি ব্রাম্ভণে ডাকিল ত্বরিত।। জিজ্ঞাসিল ব্রাম্ভণেরে সব বিবরণ। ব্রাম্ভণ বলিল শুন ইহার কারণ।। কালিকার পঞ্চক আছিল মম ঘর। আমাকে শোকার্ত্ত দেখি এক দ্বিজবর।। সদয় হৈয়া দ্বিজ দানিয়া অভয়। বলি লৈয়া বকস্থানে গেল মহাশয়।। সেই দ্বিজবর বকে করিল সংহার। সেইত রাজ্যের দ্বিজ করিল নিস্তার।। আনন্দে ব্রাম্ভণ এল আপনার ঘরে। দেবতুল্য দ্বিজবর পূজে পাণ্ডবেরে।। ------ ধৃষ্টদ্যুম্ন ও দ্রৌপদীর উৎপত্তি কথন। হেনমতে দ্বিজগৃহে কত দিন যায়। আচম্বিতে এক দ্বিজ আইল তথায়।। বিবিধ দেশের কথা কহে তপোধন। পঞ্চপুত্র সহ কুন্তী করেন শ্রবণ।। দ্বিজ বলে করিলাম দেশ পর্য্যটন। বহু নদী তীর্থক্ষেত্র না যায় গণন।। দেখিলাম আশ্চর্য্য যে পাঞ্চাল নগরে। মহোৎসব দ্রুপদ কন্যার সয়ংবরে।। দ্রুপদ রাজার কন্যা কৃষ্ণানাম ধরে। রূপে গুণে তুল্য নাহি পৃথিবী ভিতরে।। অযোনিসম্ভবা কন্যা জন্ম যজ্ঞ হৈতে। যাজ্ঞসেনী নাম তার বিখ্যাত জগতে।। দ্রুপদের পুত্র এক রূপগুণধাম। দ্রোণ বিনাশিতে জন্ম ধৃষ্টদুম্ন নাম।। এত শুনি জিজ্ঞাসেন পাণ্ডুপুত্রগণ। কহ শুনি দ্বিজবর ইহার কারণ।। দ্বিজ বলে পূর্ব্বে দ্রোণ দ্রুপদের মিত। কত দিনে কলহ হইল আচম্বিত।। অভিমানে গেল দ্রোণ হস্তিনানগর। অস্ত্র শিক্ষা করাইল কৌরব কোঙার।। শিক্ষা অন্তে শিষ্যগণে দক্ষিণা মাগিল। দ্রুপদ রাজারে বান্ধি আনিতে কহিল।। কুন্তীপুত্র অর্জ্জুন গুরু আজ্ঞা পাইয়া। দ্রূপদ রাজারে বান্ধি দিলেন আনিয়া।। অভিমানে দ্রূপদে না রুচে অন্ন জল। কেমনে মারিবে চিন্তে দ্রোণ মহাবল।। এইত ভাবনা বিনা অন্য নাহি মন। সদা গঙ্গাতীরে রাজা করেন ভ্রমণ।। যাজ উপযাজ নামে দুই সহোদর। বেদেতে বিখ্যাত দোঁহে ব্রাম্ভণ কুমার।। উপযাজে দ্রুপদ দেখিল একদিনে। বহু পূজা ভক্তি কৈল তাঁহার চরণে।। বিনয় মধুর ভাষে যুড়ি দুই কর। উপযাজ প্রতি বলে পাঞ্চাল ঈশ্বর।। এক লক্ষ ধেনু দিব অসংখ্য সুবর্ণ। যাহা চাহ দিব, মম বাঞ্ছা কর পূর্ণ।। মম ইষ্ট কর্ম্ম এই শুন মহাশয়। দ্রোণ নামে আছে ভরদ্বাজের তনয়।। অস্ত্রধারী তার তুল্য নাহি ক্ষিতি মাঝে। পৃথিবীতে নাহি হেন তার সনে যুঝে।। দ্বিতীয় পরশুরাম সম পরাক্রমে। হেন বুদ্ধি কর তারে জিনি যে সংগ্রামে।। ক্ষত্রিয়ে অশক্য শক্তি হৈয়াছে তাহার। তপোমন্ত্রবলে তার কর প্রতিকার।। হেন যজ্ঞ কর, হয় আমার নন্দন। তার ভুজবেল দ্রোণ হইবে নিধন।।