পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চরিত্র বেদের অগোচর।

     কে করিতে পারে ত্রৈলোক্য ভিতর।।
 ব্রম্ভাণ্ড বলি যে এক চতুর্দ্দশ লোকে।
 বিরাট পুরুষ ধরে এক লোমকূপে।।
 দিল অর্দ্ধ কোটি সে ব্রম্ভাণ্ড ধরে গায়।
 এমত বিরাট যাঁর নিশ্বাসে প্রলয়।।
 সেই প্রভু আপনি গোপাল-অবতার।
 মায়াতে মানবদেহ দেব নিরাকার।।
 লীলায় হইল যাঁর চরাচর জন।
 নাভি-কমলেতে সৃষ্টি করিল সৃজন।।
 ললাটে জন্মিল ধাতা চক্ষেতে তপন।
 মনেতে জন্মিল চন্দ্র নিশ্বাসে পবন।।
 ব্রম্ভ কীট হইতে যত মহীপাল।
 সর্ব্বভূতে মায়ারূপে আছয়ে গোপাল।।
 হর্ত্তা কর্ত্তা বিধাতা পুরুষ সনাতন।
 সেই সে মস্তকে বন্দে গোপাল-চরণ।।
 পঞ্চ মুখে অনুক্ষণ প্রণমে মহেশ।
 চারি মুণ্ডে বিধাতা সহস্র মুণ্ডে শেষ।।
 সেই জনে প্রণমিতে আমি কিহে গণি।
 অজ্ঞানেতে হেন কথা কহ নৃপমণি।।
 ভীষ্মের বচন শুনি হাসে জরাসন্ধ।
 কোন মূঢ় বাক্যে ত্রমি পড়িয়াছ ধন্ধ।।
 যখন মারিল দুষ্ট আমার জামাতা।
 তখন না শুনিলাম এ দুরন্ত কথা।।
 কহ ভীষ্ম এই যদি দেব নারায়ণ।
 আমার ভয়েতে পলাইল কি কারণ।।
 ভীষ্ম বলিলেন আমি সে সকল জানি।
 না জানিয়া বলি চিন্তে না ভাবিও তুমি।।
 পূর্ব্বে ছিলা রাজা তুমি দৈত্য অধিপতি।
        মরিলে পাইবে দিব্যপতি।।
 সে কারণে নারায়ণ তোমা না মারিল।
 না জানিয়া বলভদ্র মারিতে চাহিল।।
       শুনি তোমা না মারিল।
      শুনি তোমা না মারিল প্রাণে।
             পলাইলে রণে।।
 
 কি হেতু করহ তাপ
 এই আমি এথা হৈতে যাই অন্য স্থান।।
 কৃষ্ণনিন্দা স্থানে আমি তিলেক না থাকি।
 নিন্দুকেরে মারি কিংবা সে স্থান উপেক্ষি।।
 এত বলি তথা হৈতে যান অন্য স্থান।
 কাশীরাম বিরচিল শুনে পূণ্যবান্।।
       -------
     দ্রৌপদীর সভায় আগমন।
   হেনমতে তথায় যোড়শ দিন গেল।
 এক লক্ষ রাজা তবে সভায় বসিল।।
 তবে রাজা দ্রুপদ আনিয়া ধাত্রীগণ।
 আজ্ঞা কৈল দ্রৈপদীরে করিতে সাজন।।
 পাইয়া রাজার আজ্ঞা সর্ব্ব ধাত্রীগণ।
 নানা অলঙ্কার অঙ্গে করিল ভূষণ।।
 দ্রৌপদীর পুরোহিত পড়িয়া মঙ্গল।
 যাত্রা কৈল সভামধ্যে পূজিল অনল।।
 সভামধ্যে যখন দ্রৌপদী উপনীত।
 দেখি সব রাজগণ হইল মুর্চ্ছিত।।
 কামাগ্নি দাহিল চিত্তে হৈল অচেতন।
 চিত্রের পুত্তলিপ্রায় সব রাজগণ।।
 কেহ কেহ সেই স্থানে পড়িল মোহিয়া।
 গড়াগড়ি যায় কেহ অজ্ঞান হইয়া।।
 সচেতন হৈয়া কেহ নাহি চায় আর।
 কেহ কেহ জীবন বাখানে আপনার।।
 ধন্য এ জীবন যাহে দেখিনু এ রূপ।
 পাইবা এ কন্যা চিত্তে করে কোন ভূপ।।
 হেনমতে রাজগণ বিস্ময় অন্তর।
 কাশীরাম বিরচিল রচিয়া পরার।।
     -------
    দ্রৌপদীর রূপবর্ণন।
 পূর্ণ সুধাকর,       হইতে প্রবর,
        বিকচ কমল মুখ।
 গজমতি ভূষা,      তিলফুল নাসা,
        দেখি মুনি মন সুখ।।
 নেত্রযুগ মীন,       দেখিয়া হরিণ,