এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
দন্তপঙক্ত্তি-প্রভোদ্ভাসি-স্পন্দমানাধরাষ্ণিতাঃ।
একচক্রা নগরে বলিলা ব্যাসমুনি। পূর্ব্বে দ্বিজকন্যারে কহিলা শূলপাণি।। পঞ্চস্বামী হবে তোর না হবে খণ্ডন। সেই কন্যা কৃষ্ণা নামে জন্মিল এখন।। এত ভাবি মায়ে বলে আশ্বাস বচন। তোমার বচন মাতা না হবে লঙ্ঘন।। অর্জ্জুনের চিত্ত তবে বুঝিবার তরে। অর্জ্জুনেরে কহিলেন ধর্ম্ম নৃপবরে।। বড় কর্ম্ম করিলা পাইয়া বহু কষ্ট। লক্ষ্য বিন্ধি লক্ষ রাজা করিলা শ্রীভ্রষ্ট।। বহু কষ্টে প্রাপ্ত হৈলে দ্রুপদ-নন্দিনী। শুভকর্ম্মে বিলম্ব না করা ভাল মানি।। ডাকাইয়া আনিয়া ধৌমাদি দ্বিজগণে। কর আজি বিবাহ রজনী শুভক্ষণে।। কৃতাঞ্জলি হইয়াকহেন ধনঞ্জয়। অবিহিত কি হেতু বলহ মহাশয়।। লোকে বেদে নিন্দে যেই কর্ম্ম দুরাচার। বিবাহ তোমার অগ্রে হইবে আমার।। প্রথমে তোমার অগ্রে ভীম তার পাছে। অনন্তর আমার শাস্ত্রে যেমন আছে।। পার্থবাক্য শুনি ধর্ম্ম হৈয়া হৃষ্টমন। শিরে চুম্ব দিয়া করিলান আলিঙ্গন।। কুম্ভকারশালে যবে করেন প্রবেশ। হেনকালে আইলেন রাম হৃষীকেশ।। মহাভারতের কথা অমৃত-সমান। কাশীরাম কহে সদা শুনে পুণ্যবান্।। ------ কুন্তীর নিকটে শ্রীকৃষ্ণের আগমন। প্রণাম করিয়া দোঁহে কুন্তীর চরণে। আপনার পরিচয় দেন দুইজনে।। শুনি শুরসেন-সুতা দোঁহে করি কোলে। দোঁহারে করান স্নান নয়নের জলে।। কোথা ছিলে তাত মোর অত্ন্ধকের নড়ি। হাপুতির পুত তোরা দরিদ্রের কড়ি।। দ্বাদশ বৎসর আজি মখ নাহি দেখি। অনুক্ষণ কান্দিয়া দুর্ব্বল হৈল আঁখি।। কহ তাত সবার কুশল সমাচার। তোমার মায়ের আর আমার ভ্রাতার।। দ্বাদশ বৎসর হৈল নাহি দেখি শুনি। কেবা মরে কেবা জীয়ে কিছুই না জানি।। নাহি জানি তোমার এতেক নিষ্ঠুরতা। না জানি যে এতেক নির্দ্দয় তোর পিতা।। বনে বনে কত ভ্রমিলাম দেশ দেশ। দ্বাদশ বৎসর কেহ না করে উদ্দেশ।। কৃষ্ণ বলিলেন দেবি ত্যাজ মনস্তাপ। না ভুঞ্জিলে না খণ্ডে পূর্ব্বের পরিতাপ।। গৃহদাহে মরিলা শুনিয়া এই কথা। সাতদিন অন্নজল না ছুঁইলেন পিতা।। আমারে পাঠাইলেন বুঝিতে কারণ। বিদুরেরে স্থানে শুনিলাম বিবরণ।। দ্বাদশ বৎসর কষ্ট অরন্যে পাইলে। তোমা স্মরি তাত ভাসিলেন অশ্রুজলে।। শত্রুভয়ে আমার উদ্দেশ না পাইলা। মম আত্মা সর্ব্বক্ষণ তোমা প্রতি ছিলা।। শোক না করিহ দেবি দুঃখ হৈল শেষ। কালি কিংবা পরশ্ব চলহ নিজ দেশ।। কুন্তীরে প্রণাম করি যান ধর্ম্মপাশ। কৃতাঞ্জলি প্রণমিয়া সকরুণ ভাষ।। শীঘ্র উঠি ধর্ম্মসুত করি আলিঙ্গন। দোঁহাকার অশ্রুজলে ভাসেন দুজন।। স্নেহভাবে দোঁহারে না ছাড়ে দুইজন। বহুক্ষণ দোঁহা মুখে না সরে বচন।। তবে পাঁচ ভাই রামকৃষ্ণে সম্বোধিয়া। যতেক পূর্ব্বের কষ্ট কহয়ে বসিয়া।। কহেন সকল কথা ধর্ম্মের নন্দন। জতুগৃহে যে প্রকারে হইল দাহন।। বিদুরের মন্ত্রণাতে যেমত উদ্ধার। রাক্ষসের মুখে রক্ষা হৈল যে প্রকার।। বনে বনে দেশে দেশে তপস্বীর বেশ। দ্বাদশ বৎসর যত পাইলেন ক্লেশ।। একে একে কহেন সকল সমাচার। শুনি আশ্বাসিয়া বলে দেবকী-কুমার।।