পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিলোভয়ন্তীর্বিবিধৈ-র্বিভ্রমৈভার্বগর্ভিতৈঃ।।

 দুষ্ট ধৃতরাষ্ট্র নষ্ট তার পুত্রগণ।
 সমুচিত ফল তারা পাইবে এক্ষণ।।
 যদি প্রীতিতে বাঁটিয়া না দেয় রাজ্যভার।
 সকলে মিলিয়া তারে করিব সংহার।।
 যুধিষ্ঠির বলিলেন তবে দামোদরে।
 কিমতে জানিলা আমি কুম্ভকার-ঘরে।।
 শ্রীকৃষ্ণ বলেন যে করিল তব ভাই।
 মনুষ্য করিবে হেন ক্ষিতিমাঝে নাই।।
 যুধিষ্ঠির বলিলেন আজি সুপ্রভাত।
 তেঁই আজি নয়নে দেখিনু জগন্নাথ।।
 একমাত্র বড় ভয় হতেছে অন্তরে।
 সবে জ্ঞাত হৈল আমি কুম্ভকার-ঘরে।।
 বিশেষ তোমার হইয়াছে আগমন।
 এ সব বার্ত্তা পাছে শুনে দুর্য্যোধন।।
 গোবিন্দ বলেন রাজা ভয় কর কারে।
 আত দুর্য্যোধন তোমা কি করিতে পারে।।
 তিন লোক সহায় করিয়া যদি আসে।
 মুহুর্ত্তেকে নিবারিব চক্ষুর নিমেষে।।
 সপ্তবংশ সহ আমি যাজ্ঞসেন সখা।
 বারেবারে করিবে জয় ভীমার্জ্জুন একা।।
 যুধিষ্ঠির বলেন যে তাহারে না গণি।
 জ্যেষ্ঠতাত ধৃতরাষ্ট্র তারে ভয় মানি।।
 আজিকার রজনী বঞ্চিব এই দেশে।
 যেই চিত্তে লয় কালি করিব দিবসে।।
 এত বলি মেলানি করিল দুইজন।
 বিদায় হইয়া যান রাম নারায়ণ।।
 মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
 কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।।
       ------
 দ্রুপদ রাজার খেদ ও ধৃষ্টদ্যুম্নের প্রবোধ।
   হেথা যাজ্ঞসেন রাজা যাজ্ঞসেনী-শোকে।
 ভুমে গড়াগড়ি দিয়া কান্দে অধোমুখে।।
 রাজারে বেড়িয়া কান্দে যত মন্ত্রীগণ।
 পুত্রগণ কান্দে আর অন্তঃপুর জন।।
 হেনকালে ধৃষ্টদ্যুম্ন উত্তরিল তথা।
 রাজা বলে একি দেখি কৃষ্ণা মম কোথা।।
 হরি হরি বিধি মম কৈলা হেন গতি।
 অবহেলে হারাইনু কৃষ্ণা গুণবতী।।
 কহ পুত্র কৃষ্ণার কুশল সমাচার।
 কোথা গেল লক্ষ্যবেদ্ধা ব্রাম্ভণকুমার।।
 সর্ব্বনাশ করিলেন ব্যাস মুনিবর।
 তাঁর বোলে কৃষ্ণার হইল সয়ংবর।।
 ধনুর্ব্বাণ দিল লক্ষ্য করিয়া নির্ম্মান।
 বলিলেন পার্থ বিনা না পারিবে আন।।
 মম কর্ম্মদোষে মুনিবাক্য মিথ্যা হৈল।
 কালে বিপরীত ফল আমাতে ফলিল।।
 কহ বাপু কৃষ্ণা রাখি আইলা কোথায়।
 কৃষ্ণা ছাড়ি কোন্ মুখে আইলা হেথায়।।
 হা কৃষ্ণা হা কৃষ্ণা মম প্রাণের তনয়া।
 এত বলি পড়ে রাজা মূর্চ্ছাগত হৈয়া।।
 ধৃষ্টদ্যুম্ন বলে আর না কান্দ রাজন্।
 সকল মঙ্গল রাজা ত্যাজ দুঃখ মন।।
 ব্যাসের বচন রাজা কভু মিথ্যা নয়।
 তোমার মানস পূর্ণ হইল নিশ্চয়।।
 শুনি কহ কহ বলি উঠিল রাজন।
 কিমতে হইল সত্য ব্যাসের বচন।।
 শতপুর করিয়া বেড়িল রাজগণ।
 সবাকে জিনিল সেই একক ব্রাম্ভণ।।
 সহায় হইল তার এক দ্বিজ আর।
 সুরাসুর মনুষ্যে সদৃশ নাহি তার।।
 হাতে বৃক্ষ এল যেন বজ্রহস্তে ইন্দ্র।
 ভঙ্গ দিয়া পলাইয়া গেল নৃপবৃন্দ।।
 এইমত যুদ্ধ তাত হইল রজনী।
 দুইজন সঙ্গে চলি গেল যাজ্ঞসেনী।।
 এ দোহার সহ তাত আর তিন জন।
 পথেতে যাইতে হৈল সবার মিলন।।
 ভার্গবের কর্ম্মশাল-আশ্রয় আছিল।
 পাঁচজন মিলিয়া তথায় চলি গেল।।
 স্ত্রী এক আছিল তথা পরমা সুন্দরী।
 তাঁর রূপে বিনা দীপে ঘর আলো করি।।
 জননী হইবে তাঁর বুঝি অভিপ্রায়।
 তিন ভাই কৃষ্ণা সহ রাখিয়া তথায়।।