এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
গোপীনাং নয়নোৎপলার্চ্চিত-তনুং গো-গোপ-সংঘাবৃত্ং।
গৃহদাহে মৈল বলি কহে সর্ব্বজন। জৌগৃহ করিল বলি শুনি যে এখন।। এ সকল কষ্ট চিত্তে না ভাবিহ আর। মম ধন রাজ্য বাপু সকলি তোমার।। তবে কতক্ষণান্তরে বলয়ে বচন। বিবাহ করহ পার্থ করি শুভক্ষণ।। শুনিয়া কহেন তবে ধর্ম্মের কুমার। রাজা বলে যাহা ইচ্ছা বিচারে তোমার।। তুমি কিংবা বৃকোদর কিংবা ধনঞ্জয়। কিংবা দুইজন এই মাদ্রীর তনয়।। যুধিষ্ঠির বলেন যে মায়ের বচনে। দ্রৌপদীকে বিবাহ করিব পঞ্চজনে।। যুধিষ্ঠির-বাক্য শুনি বিস্মিত নৃপতি। অধোমুখ হৈয়া তবে নিরীক্ষয়ে ক্ষিতি।। কুন্তীপুত্র শ্রেষ্ঠ তুমি ধর্ম্ম-অবতার। তুমি হেন বল আমি কি বলিব আর।। বহু পতি ধরে সতী নাহি শুনি ক্ষিতি।। লোকে বেদে নাহি শুনি স্ত্রীর বহু পতি।। পূর্ব্বে সাধুগণ সব যাহা নাহি করে। সম্প্রতি ধার্ম্মিকগণ তাহা না আচরে।। এমত অপূর্ব্ব কথা কভু নাহি শুনি। ইতরের প্রায় কেন কহ হেন বাণী।। যুধিষ্ঠির বলিলেন এ কথা প্রমাণ। পূর্ব্বসাধুগণ-পথ কে করিবে আন।। লোকে বেদে যাহা কয় জানিও রজন। গুরুজনবাক্য কভু নক করি লঙ্ঘন।। লোকমত কর্ম্ম রাজা করিব সর্ব্বথা। কিন্ত গুরুবগণবাক্য না করি অন্যথা।। লোকমধ্যে গুরু শ্রেষ্ঠ গুরুতে জননী। মাতৃবাক্য কেমনে লঙ্ঘিব নৃপমণি।। মাতা মম গুরুদেব ইষ্টদেব জানি। মাতার বচন আমি দেবতুল্য মানি।। মাতার বচন লঙ্ঘে যেই দুরাচার। যতেক সুকৃতি কর্ম্ম নিস্ফল তাহার।। কতক্ষণে উত্তর করিল নরপতি। নারিনু এ বিধি দিতে কি আছে শকতি।। তুমি আর ধৃষ্টদ্যুম্ন পুরোহিত সহ। এ কথা বিচার করি আমারে সে কহ।। মহাভারতের কথা সুধাসিন্ধুবত। কাশীদাস কহে সাধু পিয়ে অনুব্রত।। ------ দ্রৌপদীর বিবাহ হেতু মুনিগণের রাজসভায় আগমণ অন্তর্য্যামী সর্ব্বজ্ঞ সকল মুনিগণ। পাণ্ডব-বিবাহ হেতু কৈলা আগমন।। শিষ্যসহ পরাশর মুনি যে আইল। জমদগ্নি জৈমিনী শ্রীঅসিত দেবল।। দুর্ব্বাসা লোমশ আঙ্গিরস তপোধন। শিষ্য ষাটি সহস্র আইল দ্বৈপায়ন।। যতেক আইল মুনি লিখনে যায়। দ্বারী সবে আসিতে দ্রুপদে জানায়।। শুনিয়া দ্রুপদ রাজা শীদ্গ্রগতি উঠি। অগ্রসরি প্রণমিল ভুমে শির লুঠি। অগ্রেতে সংগ্রহ করি আছিল রাজন। বসিবারে সবে দিল উত্তম আসন।। পাদ্য অর্ঘ্য ধুপ দীপ গন্ধে কৈল পূজা। যোড়হাতে দণ্ডাইল পাঞ্চালের রাজা।। আমার ভাগ্যের কথা কহনে না যায়। সে কারণে মুনিগণ আইল হেতায়।। আছিল সন্দেহ এই বিবাহ কারণ। বিধিদাতা সংসারে তোমরা সর্ব্বজন।। যে বিধান কহিবে বিধান সেই মত। বিচারিয়া সব কথা দেহ অভিমত।। মুনিগণ বলে শুন ইহা কি কহিব। পূর্ব্বে যে ধাতার সৃষ্টি তাহা কি ঘুচাব।। কৃষ্ণার বিবাহ হেতু এই নিরুপণ। দ্রৌপদীর পঞ্চ পতি বিধির লিখন।। দেখতেছি সৃষ্টি স্থিতি গোচরে সর্ব্বথা। পঞ্চ পতি দ্রৌপদীর কে করে অন্যথা।। মুনিগণ মুখে শুনি এতেক বচন। মৌনী হয়ে রহিলেন দ্রুপদ রাজন্।। ধৃষ্টদ্যুম্ন বলে নাহি শুনি সংসারেতে। লোকে যাহা নাহি তাহা করিব কিমতে।।