এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
গোবিন্দং কলবেণুবাদনপরং দিব্যাঙ্গভূষং ভজে।।
যথার্থ করিতে কর্ম্ম লোকে উপহাস। এমত নিন্দিত কর্ম্মে কহ কেন ভাষ।। যুধিষ্ঠির বলিলেন অন্য নাহি জানি। মায়ের বচন যে অধিক বেদবাণী।। মুনিগণ মুখে শুনিয়াছি পূর্ব্বকথা। জটিল ব্রাম্ভণ ছিল ধর্ম্মশাস্ত্রজ্ঞাতা।। যত দ্বিজগণে তিনি করান অধ্যয়ন। সর্ব্বশাস্ত্র বেদাগম গ্রন্থ ব্যাকরণ।। পড়াইয়া পাছে দেন এই উপদেশ। যত শাস্ত্র হ'তে শুন কহি যে বিশেষ।। মাতার যে আজ্ঞা যত্নে করিবে পালন। না করিবে দ্বিধা রহে বেদের বচন।। লোক হৈতে গুরু শ্রেষ্ঠ আমি মানি। সর্ব্বগুরু হৈতে শ্রেষ্ঠ গণি যে জননী।। জননী আমারে আজ্ঞা দেন এইমত। পঞ্চজনে লহ বাঁটি অন্য ভিক্ষা মত।। ধর্ম্মাধর্ম্ম বলি তাহা কে বুঝিতে পারে। অধর্ম্মেতে আছে ধর্ম্ম ধর্ম্মে পাপ করে।। অধর্ম্ম কর্ম্মেতে মম মন নাহি লয়। এ কর্ম্ম করিতে মম চিত্তে নাহি ভয়।। সে কারণে বুঝি এই ধর্ম্ম আচরণ। বিশেষ খণ্ডিতে নারি মায়ের বচন।। অনন্তরে বলিতে লাগিল বৃকোদর। কার শক্তি লঙ্ঘিবেক ধর্ম্মের উত্তর।। বেদশাস্ত্র লোক আমি সবার বাহির। আমা সবাকার ধাতা কর্ত্তা যুধিষ্ঠির।। আমরা না মানি শাস্ত্র কিবা অন্য জনে। ধর্ম্ম আজ্ঞা পালন করি যে প্রাণপণে।। কে লঙ্ঘিবে যে আজ্ঞা করেন যুধিষ্ঠির। অনেক সহিনু এ পাঞ্চাল নৃপতির।। পুনঃ পুনঃ ধর্ম্মবাক্য করিল হেলন। অন্যজন হৈলে আজি লইতাম জীবন।। সন্মন্ধে শ্বশুর ইনি গুরু মধে গণি। মম ক্রোধানল শান্ত হইল আপনি।। লোকে বেদে বলে যদি নহে ভীত মন। আজি হৈতে সর্ব্বশাস্ত্রে করহ লিখন।। হেনকালে কুন্তী শুনি হইল বাহির। কৃতাঞ্জলি বন্দে সব চরণ মুনির।। ব্যাসের চরণ ধরি সকরুণে কয়। আমারে নিস্তার কর মিথ্যা বাক্য ভয়।। যেই বলে যুধিষ্ঠির বল সেই কথা। যেই মতে মম বাক্য না হয় অন্যথা।। মুনি বলে ত্যাজ ভয় না কর ক্রন্দন। অলঙ্ঘ্য তোমার বাক্য না হবে লঙ্ঘন।। মহাভারতের কথা সুধার সাগর। কাশীরাম দাস কহে শুনে সাধু নর।। ------ দ্রৌপদীর পঞ্চস্বামী হইবার কারণ। ব্যাস বলে সব তত্ব জান মুনিগণ। শুনহ দ্রুপদ রাজা পূর্ব্ব বিবরণ।। ত্রেতাযুগে দ্বিজকন্যা আছিল দ্রৌপদী। পতিবাঞ্ছা করি শিব পূজে নিরবধি।। রচিয়া মৃত্তিকা লিঙ্গ বনপুস্প দিয়া। ঘৃত মধু উপহার বাদ্য বাজাইয়া।। অবশেষে প্রণমিয়া পড়ি ক্ষিতিতলে। পতিং দেহি পতিং দেহি পঞ্চবার বলে।। হেনমতে বহুকাল পূজয়ে মহেশ। তুষ্ট হৈয়া বর তারে দেন ব্যোমকেশ।। পঞ্চস্বামী হবে তোর পরম সুন্দর। শুনিয়া বিস্ময় মানি কহে যোড়কর।। কেন হেন উপহাস কর শূলপাণি। লোকে বেদে বহির্ভুত অপূর্ব্ব কাহিনী।। শঙ্কর বলেন কন্যা কি দোষ আমার। স্বামী বর মাগিলা যে তুমি পাঁচবার।। অকারণে কেন আর করহ রোদন। কখন খণ্ডন নহে আমার বচন।। হইবে তোমার স্বামী পঞ্চ মহারথী। তথাপিও ক্ষিতিমধ্যে কবে তোমা সতী।। পৃথিবীতে ঘুষিবেক তোমার চরিত্র। তব নাম নিলে লোক হইবে পবিত্র।। এত বলি অন্তর্হিত হইলেন হর। গঙ্গাজলে কন্যা গিয়া ত্যাজে কলেবর।।