এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রণাম মন্ত্র--- শিল্পাচার্য্য মহাভাগ দেবানাং কার্য্যসাধক।
অগ্নি রাখে নারায়ণ, পার্থ করে মহারণ, সুরাসুর সবারে নিবারে। দেখি অর্জ্জুনের কাজ, সবিস্ময়ে দেবরাজ, সুরাসুর আগু নহে ডরে।। দেখি দেব ভঙ্গিয়ান, ক্রোধে হৈল আগুয়ান, গর্জ্জিয়া গরুড় মহাবীর। বজ্র যম দন্ত নখে, চলিল বিস্তার মুখে, গিলিবারে পার্থের শরীর।। আকাশে গরুড় পাখী, আইসে তখন দেখি, দিব্য অস্ত্র এড়ে ধনঞ্জয়। ব্রম্ভশির নামে বাণ, পূর্ব্বে কৈল গুরুদান, সকল হইল অগ্নিময়।। গর্জ্জে ব্রম্ভশির অস্ত্র, গরুড় হইল ত্রস্ত, পলাইল শ্রেষ্ঠ বিহঙ্গম। নিজ পরিবার সঙ্গ, গরুড় হইল ব্যস্ত, ক্রোধে ধায় যত ভুজঙ্গম।। বিস্তারি সহস্র ফণ, শ্বাস বহে সমীরণ, গর্জ্জনে শ্রবণে লাগে তালা। বক্রমুখ দশ শত, বিষ বর্ষে অবিরত, যেন কর্কটের মেঘমালা। ফাল্গুনী জানিল ফণী, পিপীলিকা একচাপে, সকল ভুজঙ্গে গিয়া বেড়ে।। শিখী মানে দিব্য শর, এড়ে পার্থ ধনুর্দ্ধর, লক্ষ লক্ষ হইল ময়ূর। উড়িয়া আকাশ দিগে, খণ্ড খণ্ড করি নাগে, রক্ত মাংস বরিষে প্রচুর।। নারিল সহিতে রণ, পাছু হৈল ফণিগণ, অগ্র হৈল যক্ষের ঈশ্বর। কোটি কোটি যক্ষ সাথে, ভয়ঙ্কর গদা হাতে, টঙ্কারিয়া নিল ধনুঃশর।। ঘন সিংহনাদ ছাড়ে, নানাবর্ণ অস্ত্র এড়ে, মুহুর্ত্তেকে কৈল অন্ধকার। না দেখি দিবসপতি, যেন অমাবস্যা রাতি, শরজালে ঢাকিল সংসার।। যে অস্ত্রে হে অস্ত্রবারে, যথোচিত পার্থ মারে, দৃষ্টিমাত্রে করিল সংহার। অস্ত্র ব্যর্থ দেখি কোপে, দশনে অধর চাপে, গদা লয়ে ধায় ধনেশ্বর।। পার্থ এড়ে বজ্র শর, বাজিল হৃদয়োপর, খসিয়া পড়িল গদাবর। চিন্তিয়া আপন মনে, বিমুখ হইল রণে, রণ ত্যাজি চলিল সত্বর।। সংগ্রামে পাইয়া লাজ, বাহুড়িল যক্ষরাজ, নিজ পরিবারের সংহতি। এই মতে ধনঞ্জয়, সমরে পাইয়া জয়, দেবতার করেন দুর্গতি।। এইমতে ক্রমে ক্রমে, অরুণ বরুণ যমে, সবে আসি করিল সংগ্রাম। সত্য আদি চারিযুগে, নহিল না হবে আগে, সুরে নরে যুদ্ধ অনুপম।। এই মত পুনঃ পুনঃ, সুরাসুর নাগগণ, সংগ্রাম করিল অবিরাম। হেনকালে বনমাঝ, তক্ষক পন্নগরাজ, তার সুত অশ্বসেন নাম।। সখা করি হরি হ'য়ে, খাণ্ডব তক্ষকালয়ে, থাকে সহ নিজ পরিজন। গৃহে রাখি ভার্য্যা পুত্রে, গিয়াছিল কুরুক্ষেত্রে, সেইকালে কদ্রুর নন্দন।। আচম্বিতে বন দহে, বেড়িলেক হব্যবহে, মাতা পুত্রে গণিল প্রমাদ। উপায় না দেখিয়া কিছু, কোলে করি শিশুপিছু, ফণিপ্রিয়া করেন বিষাদ।। অনলে নাহিক ত্রাণ, নাহি রক্ষা পাবে প্রাণ, অগ্নিতে ফেলাবে শর হানি। হৃদয়ে ভাবিয়া দুঃখ, চাহিয়া পুত্রের মুখ, কান্দি কহে তক্ষক-গৃহিণী।। উপায় না দেখি আর, খাণ্ডবাগ্নি হৈতে পার, শুন পুত্র আমার বচন। প্রবেশহ মোর পেটে, যদিও আমারে কাটে, তুমি যাহ লইয়া জীবন।।