এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কেয়ূরবান্ মকরকুণ্ডলবান্ কিরীটি,
ইন্দ্র আদি দেবগণ সকলে অবোধ। না জানিয়া মম সনে করিছে বিরোধ।। পলকে মারিতে পারি সবে অনায়েসে। সাধিব আপন কর্য্য কি কাজ বিনাশে।। এত চিন্তি ততক্ষন বিনতানন্দন। পাখসাটে ধূলি-পূর্ণ করিল গগন।। অনিমেষ নয়নে দেখেন দেবগণ। ধূলায় পুরিল অঙ্গ চিন্তে সর্ব্বজন।। পুরহূত পুরমাঝে যত রত্ন ছিল। গরুড়ের পাখসাটে সকলি ভাঙ্গিল।। পবনেরে আজ্ঞা দিল দেব পুরন্দর। ধুলা উড়াইয়া তুমি ফেলহ সত্ত্বর।। ইন্দ্রের আজ্ঞায় ধূলা উড়ায়ে পবন। পুনঃ আসি গরুড়ে বেড়িল সর্ব্বজন।। চতুর্দ্দিকে নানা অস্ত্র করে বরিষণ। দেখিয়া রুষিল বীর বিনতানন্দন।। পাখসাটে মারি কারে নখে বিদারিল। যে পড়ে সম্মুখে ঠোঁটে চিরিয়া ফেলিল।। সংঘাতে জর্জ্জর হইল সবার শরীর। মস্তক ভাঙ্গিল কার বুক হইল চির।। ফেলে চারিদিকে পাখসাটে উড়াইয়া। বাম্যে যম পূর্ব্বে ইন্দ্র যায় পলাইয়া। পশ্চিমে দ্বাদশ রবি পালাইল ডরে। অশ্বিনীকুমার দোঁহে পলায় উত্তরে।। পুনঃ আসি যুদ্ধ করে যত দেবগণ। প্রাণপণে করে যুদ্ধ অমৃত কারণ।। কামরূপী বিহঙ্গম বলে মহাবল। অতি ক্রোধে হৈল যেন জ্বলন্ত অনল।। প্রলয়-অনল যেন দহে সর্ব্বজন। সহিতে না পারি ভঙ্গ দিল দেবগণ।। দেবতা তেত্রিশ কোটি জিনিয়া সমরে। চন্দ্রলোকে উত্তরিল নিমেষ ভিতরে।। চন্দ্রের নিকট গিয়া দেখে মহাবল। চতুর্দ্দিক বেড়িয়াছে জ্বলন্ত অনল।। অগ্নি দেখি উপায় করিল খগবর। সুবর্ণের অঙ্গ হৈয়া প্রবেশে ভিতর।। অগ্নি পার হ'য়ে তবে দেখে খগেশ্বর। তীক্ষ্ণ ক্ষুরধার চক্র ভ্রমে নিরন্তর।। মক্ষিকা পড়িলে তাতে হয় শতখান। হেন চক্র গরুড় দেখিল বিদ্যমান।। সূচীর প্রমাণ ছিদ্র ছিল চক্রমাঝে। ততোধিক ক্ষুদ্র তথা হইল পক্ষী-রাজ।। চক্র পার হয়ে তবে বিনতানন্দন। অমৃত করিল পান আনন্দিত-মন।। ঢাকিয়া লইল সুধা পাখার ভিতর। অতিবেগে তথা হইতে চলিল সত্ত্বর।। কামরূপী মহাকায় বিনতানন্দন। সে রূপে যাইতে ইচ্ছা করিল তখন।। চক্র-অগ্নি লঙ্ঘিয়া আইল খগবর। এ সব কৌতুক দেখি ক্রোধে চক্রধর।। শূণ্যে আইসেন যথা বিনতানন্দন। দুইজনে যুদ্ধ হইল না যায় কথন।। চতুর্ভূজে চারি অস্ত্রে যুঝে নারায়ণ। পাখসাটে গরুড় করয়ে নিবারণ।। আঁচড় কামড় আর মারে পাখসাট। ক্ষুব্ধ হয় গোবিন্দের হৃদয়-কপাট।। অনেক হইল যুদ্ধ লিখন না যায়। তুষ্ট হইয়া গরুড়ে বলেন দেবরায়।। তোমার বিক্রমে তুষ্ট হলাম খেচর। মনোনীত মাগ তুমি আমি দিব বর।। গরুড় বলিল যদি তুমি দিবা বর। তোমা হৈতে উচ্চেতে বসিব নিরন্তর।। অজয় অমর হব অজিত সংসারে। বিষ্ণু কন যথা ইচ্ছা দিলাম তোমারে।। বর পেয়ে হৃষ্টচিত্তে বলে খগেশ্বর। আমি বর দিব তুমি মাগ গদাধর।। গোবিন্দ বলেন তুমি যদি দিবে বর। আমার বাহন তুমি হও খগেশ্বর।। গরুড় বলিল মম সত্য অঙ্গীকার। নিশ্চয় বাহন আমি হইব তোমার।। উচ্চস্থল দিতে যে আমারে দিলে বর। শ্রীহরি বলেন বৈস রথের উপর।।