এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
লোচন-ত্রয়-সংযুক্তাং-পূর্ণেন্দু-সদৃশাননাং।।
বৃহস্পতি পুরোহিত করেন বাসব। দৈত্যবংশে পুরোহিত হইল ভার্গব।। যুদ্ধে যত দৈত্যবধ করে যত দেবে। সকল জীয়ান শুক্র মন্ত্রের প্রভাবে।। সঞ্জীবনীমন্ত্রে ভৃগুপুত্রের অভ্যাস। যত মরে তত জীয়ে নাহিক বিনাশ।। যুদ্ধে যত দেবগ্ণ হইত নিধন। জীয়াইতে না পারেন অঙ্গিরানন্দন।। শুক্রের প্রভাবে দেবগণ চমৎকার। সকলে মিলিয়া এক করিল বিচার।। কচ নামে ছিল বৃহিষ্পতির নন্দন। তাঁহারে বলিল তবে সব দেবগণ।। বৃষপর্ব্বপুরে হয় শুক্রের বসতি। তোমা বিনা যাইতে না পারে কোন কৃতী।। শিষ্য হ'য়ে শুক্রস্থানে কর অধ্যয়ন। দেবযানী তাঁর কন্যা করিবে সেবন।। এত যদি বলিল সকল দেবগণ। বৃষপর্ব্বপুরে কচ করিল গমন।। শুক্রের চরণে কচ করি নমষ্কার। প্রত্যক্ষেতে পরিচয় দিল আপনার।। অঙ্গীরার পুত্র আমি জীবের নন্দন। পড়িবারে আইলাম তোমার সদন।। এত শুনি শুক্র তাঁরা করিল আশ্বাস। পড়াব' সকল শাস্ত্র এই অভিলাষ।। শুক্রের আশ্বাসে কচ আনন্দিত মন। ব্রম্ভচর্য্য আদি বিদ্যা করেন পঠন।। বিবিধ প্রকারে কচ শুক্রে সেবা করে। ততোধিক সেবে কচ তাহার কন্যারে।। করযোড়ে থাকে কচ দেবযানী আগে। অবিলম্বে আনে কচ যাহা কন্যা মাগে।। নৃত্যগীত বাদ্যে সদা তোষে তাঁর মন। আজ্ঞাবর্ত্তী হৈয়া তার থাকে অনুক্ষণ।। হেনমতে পঞ্চশত বৎসর যে গেল। গাভী রাখিবারে শুক্র কচে নিয়োজিল।। গোধণ রক্ষণে কচ নিত্য যায় বনে। দৈত্যগণ তাহারে দেখিল একদিনে।। জানিল তাহারে দেবগুরুর নন্দন। শুক্রস্থানে আসিয়াছে মন্ত্রের কারণ।। তবে সব দৈত্যগণ কচেরে মারিয়া। তীক্ষ্ণ খড়্গে খণ্ড খণ্ড করিল কাটিয়া।। অস্থি মাংস সব শার্দ্দুলে খাওয়াইল। কচে মারি দৈত্যগণ নিজ ঘরে গেল।। সন্ধ্যাকালে গাভীগণ প্রবেশে নগরে। কচ নাহি গাভীগণ প্রবেশিল ঘরে।। কচ নাহি দেবযানী হইল চিন্তিত। কান্দিয়া পিতার ঠাঁই জানায় ত্বরিত।। গাভীগণ আসে ঘরে কচ না আইল। সিংহ ব্যাঘ্র দৈত্য কি তারে বিনাশিল।। নিশ্চয় মরিব আমি কচের বিহনে। এত বলি দেবযানী ভালে কর হানে।। শুক্র বলেদেবযানী না করে ক্রন্দন। মন্ত্রবলে কচে আমি জীয়াব এখন।। এস কচ বলি শুক্র তিন ডাক দিল। মন্ত্রের প্রভাবে কচ আসি উত্তরিল।। কচে দেখি দেবযানী আনন্দিত মন। জিজ্ঞাসিল কোথায় আছিলে এতক্ষণ।। কচ বলে দৈত্যগণ আমারে মারিল। প্রসন্ন হইয়া গুরু পুনঃ জীয়াইল।। এত শুনি দেবযানী পিতারে কহিল। গোধন-রক্ষণ হেতু নিষেধ করিল।। ভারতের কথা সব শুনিতে অমৃত। পাঁচালী প্রবন্ধে কাশীদাসা বিরচিত।।
-------- কচ ও দেবযানীর পরস্পর অভিশাপ তবে কতদিনে কচে বলে দেবযানী। দেব আরাধিব কিছু পুষ্প দেহ আনি।। আজ্ঞা ল'য়ে কচ গেল পুষ্প আনিবারে। পুনরাপি দেখি তারে ধরিল অসুরে। তিলেক প্রমান কৈল খড়্গেতে কাটিয়া। ঘৃতেভাজি অস্থি মাংস একত্র করিয়া।। তবে সব দৈত্যগণ করিল বিচার। অন্যতে খাইলে তার নাহিক নিস্তার।।